বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

বিশেষ সম্পাদকীয়

ঈদ আনন্দ আসুক  সবার ঘরে

শাহাব উদ্দিন সাগর

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ৬ জুন ২০২৫

ঈদ আনন্দ আসুক  সবার ঘরে

ছবি: সংগৃহীত

আজ শুক্রবার মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। প্রতিবছর আরবি বর্ষপঞ্জির ১০ জিলহজ ঈদের নামাজ ও পশু কোরবানির মাধ্যমে উদ্যাপিত হয় এই উৎসব। আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি এই উৎসবের লক্ষ্য ত্যাগের মহিমায় সমাজটা সুন্দর করে তোলা, ¯্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে সৃষ্টির জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া।

ঈদের দিন নতুন জামাকাপড় পরিধান করে ঈদগাহে যেতে সবারই ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোরবানি দিতে। কিন্তু সাধ আর সাধ্য না মেলায় অনেকের ঈদ ফিকে হয়ে যায়। সমাজের অধিকাংশ মানুষেরই এখনো কোরবানি করার সামর্থ্য নেই। কোরবানি দিতে না পেরে অনেক অসহায় মানুষের মুখের হাসি বিলীন হয়ে যায়। মনে রাখতে হবে, ত্যাগের শিক্ষা নিয়ে আকাশে জিলহজের বাঁকা চাঁদ হাসি দেয়। পরস্পর আনন্দ ভাগাভাগি করার নাম ঈদ। গরিব-অসহায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে যদি ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা যায়—তবেই কোরবানির প্রকৃত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
সমাজে যারা কষ্ট-দুর্দশায় দিনাতিপাত করে, তাদের ঘরেও যেন ঈদের আনন্দ আসে, তাদের হাঁড়িতেও যেন মাংস রান্না হয় সে বিষয়ে কোরবানিদাতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে। অযথা বিত্তবৈভবের মহড়া না দেখিয়ে সত্যিকারের ইবাদত ও সমাজসেবার মানসে গরিব-দুঃখী-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। এ ছাড়া দায়িত্বের কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডাক্তার-সাংবাদিক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, নিরাপত্তাকর্মীসহ নানা পেশার মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারেন না। তাঁদের সঙ্গেও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে হবে।
ঈদের দিন নামাজ আদায় করে সামর্থ্যবানরা কোরবানি করে থাকেন। এটা তাঁদের কর্তব্য। তবে শুধু পশু জবাই আর মাংস বণ্টন করে ঘরে নেওয়ার মধ্যেই এই কর্তব্য শেষ নয়। কোরবানির পশুর রক্ত, মজ্জা, হাড়গোড় আর বিষ্ঠা পড়ে থেকে পরিবেশ যেন নষ্ট না হয়—সে ব্যাপারে সতর্ক থাকাও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। কোরবানির পশুর বর্জ্যের কারণে যদি অন্য মানুষ কষ্ট পায়, পথ চলতে না পারে— াহলে তা সচেতন মুসলমানের পরিচয় নয়। 
ঈদুল আজহার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে হজের বিধান। শুভ্র বসনে রবের দুয়ারে রহমতের ভিখারি হন হাজিরা। হজ মুসলিম উম্মাহর বিশ্ব সম্মেলন। বর্ণ, গোত্র ও জাতীয়তার ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দেয় হজ। মক্কায় এখন যাঁরা হজের ইবাদতে নিয়োজিত, তাঁদের হজ আল্লাহ কবুল করুক। যাঁদের এখনো হজ করার সৌভাগ্য হয়নি মহান আল্লাহ কাবা প্রান্তরে গিয়ে লাব্বাইক ধ্বনি তোলার সুযোগ দিক।
হজের শুভ্রতা, কোরবানির ত্যাগ আর উৎসবের আনন্দে ঈদুল আজহা প্রিয়জনদের সঙ্গে সুন্দর কাটুক। পৃথিবীর নানা প্রান্তে নির্যাতিত মানুষ মুক্তি পাক। ঈদের আনন্দে ধুয়ে-মুছে যাক সব দুঃখ-গ্লানি। সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
 

শেয়ার করুন: