
রিচমন্ড হিলে বাংলাদেশি বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে বাংলাদেশি এক ভাড়াটিয়ার বাসায় হিট, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে নেমেছে বিভিন্ন সংগঠন। সাউথ রিচমন্ড হিলের ১০৭-৫০ ওয়ান সিক্সটিন্থ স্ট্রিটের ওই বাড়ির সামনে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সংগঠনগুলো। এই বাড়ির মালিকও একজন বাংলাদেশি।
২০ জানুয়ারি প্রবাসী টিভি’র কর্ণধার সিনিয়র সাংবাদিক সোহেল মাহমুদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি জনসমক্ষে আসে। প্রবাসী টিভি’র ফেসবুক পেজে বাড়ির মালিক কর্তৃক বেজমেন্টের ভাড়াটিয়াকে গ্যাস, বিদ্যুত ও পানি বিচ্ছিন্ন করে রাখার ভিডিও ভাইরাল হয়। হাজার হাজার মানুষ ফেসবুক পেজে নিন্দা জানানোর পাশাপাশি এর প্রতিকারও প্রত্যাশা করেন। এরপর, প্রতিবাদে নামে নিউইয়র্কে ভাড়াটিয়াদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে এমন সংগঠনগুলো।
ভাড়াটিয়ার অভিযোগ, গত বছরের অক্টোবরে তিনি ওই বাসাটি ভাড়া নেন। শুরু থেকে গ্যাসের সমস্যা, হিটের সমস্যায় নাজেহাল হতে থাকেন তারা। গত ১৪ জানুয়ারি বাসার কিচেন ও লিভিং রুমে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন বাড়িওয়ালা। একই সাথে, কিচেনে পানিও বন্ধ করে দেয়া হয়।
ভাড়াটিয়া জানিয়েছেন, হিটের ব্যাপারে দিনের দিন বলেও কোন প্রতিকার পাননি তারা। নষ্ট গ্যাসের চুলা ঠিক করতে কয়েক সপ্তাহ সময় নেন বাড়িওয়ালা। পুরনো ফ্রিজ না পাল্টে সেটিকে স্কচট্যাপ লাগিয়ে ব্যবহার করতে বলেন ভাড়াটিয়াকে। নানা অব্যবস্থার পরিণতিতে জানুয়ারি মাসের ভাড়া পরিশোধ না করে ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালাকে বাসার সব সমস্যা সমাধানের দাবি জানালে বাড়িওয়ালা হিট চালু না করে উল্টো বাসার একাংশের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেন।
উল্লেখ্য, এই বাড়ির মালিক থাকেন বাংলাদেশে। তার দুই ছেলে বাড়িটির দেখভাল করেন। বার বার ফোন করার পরও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দুই ফ্যামিলির জন্য অনুমোদিত এই বাড়িতে বর্তমানে ৫টি পরিবার বসবাস করছে বলে সিটির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। প্রথম তলায় এক পরিবারের বাসাকে দুই পরিবারের বাসায় পরিবর্তন করা হয়েছে। এজন্য বাড়ি মালিককে ভায়োলেশন নোটিশ দেয়া হয়েছে। ১৬ জানুয়ারিতে আরেকটি পরিদর্শনে প্রথম তলায় (পেছনের বাসায়) হিট না থাকায় আবারো ভায়োলেশন নোটিশ ইস্যু করা হয়। তথ্য সূত্র : প্রবাসী টিভি ।
প্রতিবাদ সমাবেশে জানানো হয়, আলোচিত বাড়িটির ভেতরের অবস্থা জানাজানি হবার পর এ নিয়ে নিন্দা আর প্রতিবাদ শুরু হলে সপ্তাহখানেক পর ওই ভাড়াটিয়ার কিচেনে গরম পানি চালু করা হয়। প্রতিবাদকারীরা বাসাটিতে সব ধরনের সুবিধা চালুর দাবি জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে একাধিক প্রতিবাদকারী অভিযোগ করেন, তারা নানাভাবে বাড়ির মালিক কর্তৃক অবহেলার শিকার হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় সুবিধা না দিয়ে তারা শুধু ভাড়া আদায় করে যাচ্ছেন। তাও আবার সে সব ভঅড়ার বিপরীতে কোনো প্রমাণপত্র দিতে রাজী হন না। চেক দিলেও তারা নেন না। বাড়ির মালিকরা শুধু নগদ অর্থ নিতে চান ভাড়া বাবদ কোনো প্রশান না রেখেই।
এ বিষয়ে ড্রামের কাজী ফৌজিয়া বলেন, আমরা ভাড়াটিয়াদের যে ন্যায্য দাবি আছে সেটাই আদায় করার জন্য প্রতিবাদ করছি। এই প্রতিবাদ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলেও আমরা সকল বাড়ি মালিকদের এই বার্তা দিতে চাই যে, ভাড়াটিয়া যত দুর্বলই হোক না কেনো আমরা তাদের সাথে আছি, পাশে আছি। ভাড়া নিলে অবশ্যই তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে হবে। ভাড়া নিলে তার রশীদ দিতে হবে।
বারবার অভিযোগ করার পরও বাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার জন্য পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করা হয় প্রতিবাদ সমাবেশে। ভাড়া নেয়ার পরও ভাড়াটিয়ার গ্যাস, বিদ্যু, পানি বন্ধ করে দেয়ার জন্য বাড়ি মালিকের নাম ধরে সেøাগান দেয়া হয়।