
ফাইল ছবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করাসহ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর চাপ রাখতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন অর্থবিভাগ বা ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে এমনটি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের ১১ প্রতিষ্ঠান ও সাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
ওয়াশিংটনের অভিযোগ, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র লুকাশেঙ্কোর সরকার দেশটির গণতন্ত্রপন্থি বেসামরিক নাগরিক ও সমাজের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, তার পরিবারের সদস্যরা আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত এবং ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার অন্যায্য যুদ্ধে শুরু থেকেই বেলারুশের সমর্থন ও সামরিক সহায়তা রয়েছে।
আর এসব কর্মকা-ের জন্য লুকাশেঙ্কো সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনতে মার্কিন অর্থ বিভাগের আওতাধীন বিদেশি সম্পদ নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় বা ট্রেজারির অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল থেকে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত হয়।
একই দিন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে বেলজিয়ামসহ কয়েকটি দেশের ১১ প্রতিষ্ঠান ও সাত ব্যক্তি। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ও ইউক্রেন আক্রমণে সহযোগিতাকারী হিসেবে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ বা ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
অর্থ বিভাগের আওতাধীন অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জানিয়েছে বেলজিয়ামভিত্তিক হ্যান্স দে গিতিরের নেতৃত্বে পরিচালিত নেটওয়ার্কটি এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু।
এ নেটওয়ার্কের ৯ প্রতিষ্ঠান এবং পাঁচ ব্যক্তি রাশিয়া, বেলজিয়াম, সাইপ্রাস, সুইডেন, হংকং ও নেদারল্যান্ডস জুড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে ত্রুটিপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার কারণে উগান্ডায় টার্গেটেড ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন।
এতে তিনি বলেন, উগান্ডায় ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা দায়ী, জড়িত বলে মনে করা হবে টার্গেটেড ওইসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করছি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সময় আমি উগান্ডা সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছিলাম এসব ক্ষেত্রে তাদের রেকর্ডের উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনি প্রক্রিয়া, সহিংসতা ও ভীতিপ্রদর্শনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে।
এতে তিনি আরও বলেন, এখন আমি ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির আওতা বৃদ্ধির ঘোষণা দিচ্ছি। উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খর্ব করার জন্য দায়ী অথবা জড়িত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা এবং অন্যরা এর আওতায় আসবেন। যারা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ অথবা ঝুঁকিতে থাকা জনগণকে নিপীড়ন চালানোর নীতি ও কর্মকা- নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হবে এই নীতি। এর মধ্যে থাকবেন পরিবেশবাদী কর্মী, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ব্যক্তি এবং নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারও।
বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, উগান্ডার জনগণের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জনস্বাস্থ্য এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে একত্রিতভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবারো উগান্ডা সরকারকে দৃঢ়তার সঙ্গে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে মানবাধিকারকে সুরক্ষিত রাখতে উৎসাহিত করেন। যাতে দুই দেশের মধ্যে বহু দশকের অংশীদারিত্বকে টেকসই করা যায় এবং তাতে মার্কিন ও উগান্ডার নাগরিকরা সুবিধা পান।