
ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্কে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ের বাস্তবতা, মানুষের কষ্ট আর মানবিক বিপর্যয়ের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে এক হৃদয়স্পর্শী প্রামাণ্যচিত্র “হোপ নেভার ডাইস”। এই প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে সংকটের মধ্যেও কীভাবে মানুষ আশা ধরে রেখেছে, একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার এই প্রামাণ্যচিত্রের বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে। নিউইয়র্কের জ্যামাইকার লাইব্রেরির সেন্ট্রাল অফিস (৮৯-১১ মেরিক রোড,জ্যামাইকা, নিউইয়র্ক ১১৪৩২) মিলনায়তনে দুপুর ২টায় এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
কুইন্স লাইব্রেরির নিউ অআমেরিকান প্রোগ্রাম এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে। এই আয়োজনের ইভেন্ট পার্টনার অলাভজনক সংস্থা ওয়ান ওয়ান অর্গানাইজেশন। সহায়তা দিয়েছে অটিজম সোসাইটি হাবিলিটেশন অর্গানাইজেশন (আসো)। বিনামূল্যে এই আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এতে “মুক্তির গান” ও “মাটির ময়না”র মতো চলচ্চিত্রের সহ-নির্মাতা ক্যাথরিন মাসুদকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কুইন্স লাইব্রেরির সহকারি পরিচালক ফ্রেড জে গিটনার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্পী তাজুল ইমাম, ওয়ান ওয়ান অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান মো: হাসান সহ বিশিষ্টজনেরা এতে যোগ দেবেন।
প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন মেলাল শাহ এবং খন্দকার রাশিদুল হক। যন্ত্র সঙ্গীতে থাকবেন স্বপন দত্ত। সঞ্চালনা করবেন জনম সাহা।
প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ, গবেষণা, পরিকল্পনা ও স্ক্রিপ্ট লিখেছেন লেখক, সাংবাদিক ও নির্মাতা শামীম আল আমিন। ৪৪ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই প্রামাণ্যচিত্রে নিউইয়র্ককে কেন্দ্র করে কোভিড-১৯ এর সময়ের ভয়াবহতা, মানুষের লড়াই, বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও মনোবলের উঠে এসেছে।
প্রামাণ্যচিত্রে যাদের অভিজ্ঞতা ও সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে, তারা হলেন সাবেক কলেজ প্রিন্সিপাল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রানা আহমেদ, শিক্ষক, গায়িকা ও থিয়েটারকর্মী মিলাদুন অ্যানি, ইউনিসেফের টিকাদান বিষয়ক সিনিয়র অ্যাডভাইজর ডা. আনিসুর রহমান সিদ্দিকী, ক্রিডমোর সাইকিয়াট্রিক সেন্টারের চিফ সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. মুনিবুর আর খান, অ্যালমহার্স্ট হাসপাতালের এটেনডিং ফিজিশিয়ান ডা. মিতা চৌধুরী, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ মালেক, সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর, মেটা ইনফো টেক (এমআইটি) ফাউন্ডার ও সিইও মাহবুব সিদ্দিকী, নিউইয়র্কের স্কুলের শিক্ষক সহকারী, আবৃত্তিশিল্পী ও থিয়েটারকর্মী শুক্লা রায়, ইউএস পোস্টাল সার্ভিস কর্মরত ও আবৃত্তিশিল্পী গোপন সাহা, অটিজম সোসাইটি হ্যাবিলিটেশন অর্গানাইজেশন (আসো) এর নির্বাহী পরিচালক রুবাইয়া রহমান, সংগীতশিল্পী মেলাল শাহ, নিউইয়র্ক সিটির প্যারামেডিক মোতাসিম “বিল” হোসেন, সাবেক স্কুল শিক্ষক নাসিম বানু চাঁপা, ইয়েলো ক্যাব চালক আব্বাস আলী এবং হাইস্কুল শিক্ষার্থী গুঞ্জরি সাহা।
প্রামাণ্যচিত্রের সূচনা ও সমাপনীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়। ধারাবর্ণনায় ছিলেন শামস উজ জোহা। টাইপোগ্রাফি ও পোস্টার ডিজাইন করেছেন মামুন হোসাইন। রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেছেন স্বপ্নীল সজীব এবং সংগীতায়োজনে ছিলেন অভিজিৎ চক্রবর্তী জিতু। এই প্রামাণ্যচিত্রের দৃশ্যধারণ করেছেন শফিকুল ইসলাম সাবু, শামীম আল আমিন ও শেখ তানভীর আহমেদ। গ্রাফিক্স, সম্পাদনা ও সংগীতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। সিনে হাউজ মিডিয়া ছিল কারিগরি সহায়তায়। প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণে অর্থসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়েছে নিউইয়র্কের গুরুত্বপূর্ণ আইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেটা ইনফো টেক (এমআইটি)।
প্রামাণ্যচিত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পরিস্থিতির কথা এলেও এটি মূলত নিউইয়র্ককে কেন্দ্র করেই নির্মিত হয়েছে। গত ২০ জুন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে প্রামাণ্যচিত্রটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে এটি প্রদর্শনের জন্য পাঠানো হয়েছে। হোপ নেয়ার ডাইস। শুধু একটি প্রামাণ্যচিত্র নয়, বরং এটি এক ভয়াবহ সময়ের জীবন্ত দলিল এবং মানুষের অদম্য আশা ও বেঁচে থাকার প্রতীক।