ছবি: সংগৃহীত
‘বৈশাখী আবাহনে মানবের জয়গান’ এই স্লোগানে উদযাপিত হলো সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বর্ষবরণ ১৪৩২। আয়োজনে ছিলো জাহাঙ্গীরনগর এলামনাই এসোসিয়েশন অব আমেরিকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল হক এবং কুইন্স সোস্যাল এডাল্ট ডে কেয়ার।
গত শনিবার ৩ মে ইয়র্ক কলেজ একাডেমিক কোর এট্রিয়ামে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়। কৃষ্ণচূড়া ফুলকে বৈশাখ মাস তথা গ্রীষ্মকালের ফুল হিসেবে পরিচিত করা, কৃষ্ণচূড়া ব্লসমকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এবারের থিম ছিল কৃষ্ণচূড়া ফুল।
সকাল থেকেই ইয়র্ক কলেজ একাডেমিক কোর বিল্ডিং এর প্রাঙ্গণ সেজে ওঠে বৈশাখী সাজে।
এলামনাই আখতার আহমেদ রাশার পরিকল্পনা ও অঙ্কনে ১০০ ফিট লম্বা চটের উপর আলপনা, যেটা ছোট বড় সবার নজর কেড়েছে এবং প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আর্টিফিশিয়াল কৃষ্ণচূড়া ফুল আনা হয়েছিল ছবি তোলার প্রপস হিসেবে। আরও ছিলো কৃষ্ণচূড়া ফুল ও গাছের বিশাল ক্যানভাস। সেটা এই বৈশাখী সাজ সজ্জাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এট্রিয়াম এর ভিতরে রংধনুর সাতটি রঙের কাপড়ে আলপনা এঁকে সাজানো হয়।
পোশাকের পরিকল্পনায় ছিল সিলেটের মণিপুরী শাড়ি। রংধনুর উজ্জল রঙের প্রতিটি রঙ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই পোশাকের সমম্বয় চারিদিকে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়। সেই সাথে এই আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ ছিল বায়োস্কোপ। নিউইয়র্ক তথা এই উত্তর আমেরিকায় সম্ভবত এইটাই প্রথম বায়োস্কোপ। এই বায়োস্কোপ পেয়ে অনেকে হয়েছেন নস্টালজিক, ফিরে গিয়েছেন শৈশবের বৈশাখী মেলায়। আর যারা কখনো বায়োস্কোপ দেখেননি, তারা আপ্লুত হয়েছেন এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতায়।
দুপুর ১ টা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই তাদের পরিবারসহ এই মিলনায়তনে আসতে থাকে। দুপুরের খাবারের আয়োজনে থাকে নানা পদের ভর্তা, ভাজি, ইলিশ মাছ ভাজা, আমের চাটনি এবং মুরগির কারি দিয়ে ভাত। শেষ পাতে দই-মিষ্টি। আমন্ত্রিত অতিথিসহ সকলে তৃপ্তি নিয়ে এই বাঙালি খাবার উপভোগ করেন। এরপর শুরু হয় বৈশাখী প্যারেড এর প্রস্তুতি। যোগ দেন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই। এই প্যারেড পরিচালনা করেন আয়োজনের সদস্য সচিব, জাবি আলামনাই তামান্না শবনম পাপড়ি। ঢোলের তালে, নাচে, গানে, বৈশাখী ফেস্টুন আর নানা বর্ণের শাড়ি-পাঞ্জাবিতে ইয়র্ক কলেজ একাডেমিক কোর এট্রিয়াম বহিঃপ্রাঙ্গন উৎসব মুখর হয়ে ওঠে। এসময় এলামনাইদের কাছে ইয়র্ক কলেজের লাল ইট যেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। এই প্যারেড এ যোগ দেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট এর প্রতিনিধি ইশরাত জাহান, কাউন্সেলর এন্ড হেড অফ চ্যান্সেরি। প্রধান অতিথি ছিলেন নাজমুল হুদা, কনস্যুলেট জেনারেল অব বাংলাদেশ এর স্থানে তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল হক ও সাপ্তাহিক বাঙালী পত্রিকার সম্পাদক কৌশিক আহমেদ।
