
ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্কে গাড়ি চাপা দিয়ে পলাতক আসামিকে হত্যার অভিযোগে কুইন্সের এক বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩০ আগস্ট) তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে এক রাইকার্স আইল্যান্ডের এক পলাতক বন্দিকে হত্যা করেছেন, যিনি গত বছর কয়েক সপ্তাহ পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৭১ বছর বয়সী অভিযুক্ত ট্যাক্সিচালক আব্দুল হাকিম ভোর ৫টার কিছু আগে আপার ইস্ট সাইডের ইয়র্ক অ্যাভিনিউ ও ইস্ট ৭২ স্ট্রিট এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ৩৬ বছর বয়সী জেমস মোসেটিকে গাড়ি চাপা দেন।
দুর্ঘটনার পর মোসেটি গাড়ির অংশে আটকে যান এবং গাড়িটি তাকে কয়েক ব্লক পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। পরে কুইন্সবোরো ব্রিজের কাছে তিনি গাড়ি থেকে ছিটকে পড়েন। পুলিশ জানিয়েছে, নিউইয়র্ক-প্রেসবেটেরিয়ান ওয়েইল কর্নেল মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হাকিমকে আটক করা হয়। পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের সময় হাকিম স্বীকার করেছেন যে তিনি ঘটনাস্থলে ট্যাক্সি চালাচ্ছিলেন। তিনি বলেছেন, গাড়ি চলার সময় তিনি “একটি জোরে আওয়াজ” শুনেছিলেন, যা দেখে মনে হয়েছিল কিছুতে ধাক্কা লেগেছে, আর গাড়ি যেন ভারী হয়ে গেছে, যেন কিছু টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হাকিম গাড়ি না থামিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে গাড়িটি আরেক চালকের কাছে দিয়ে দেন।
দ্বিতীয় চালক গাড়ি নেওয়ার পর হুডের ক্ষতচিহ্ন দেখে অবাক হন, যা আগের দিন ছিল না। পরে হাকিমকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বারবার দাবি করেন যে তিনি কিছুতে ধাক্কা দেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, হাকিমের বিরুদ্ধে দুর্ঘটনার পর গাড়ি না থামানো ও রিপোর্ট না করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সাধারণত এই অভিযোগ মিসডিমিনর হলেও ভুক্তভোগীর মৃত্যুর কারণে এটি ফৌজদারি অভিযোগে (ফেলনি) মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ১ লাখ ডলার জামিনে কারাগারে রয়েছেন এবং আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হবেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাইয়ে মোসেটি বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যান। তবে মাত্র দুই মাইল দূরে একটি এমটিএ বাস থেকে তাকে ফের গ্রেফতার করা হয়।
তখন তার বিরুদ্ধে হামলা, ট্যাক্সি ভাড়া না দেওয়া এবং মাদক রাখার অভিযোগে মামলা চলছিল। এর মধ্যে ট্যাক্সি ভাড়া ৩৬ ডলার না দেওয়ার অভিযোগ ছিল ম্যানহাটনের লোয়ার ম্যানহাটানে।
এদিকে এই ঘটনায় নিউইয়র্ক বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালকদের সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে বলেছেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। তিনি বলেন, গাড়ি চালানো অবস্থায় যেকোন দুর্ঘটনার শিকার হলে অবশ্যই ৯১১ কল করতে হবে। এমনকি স্থান ত্যাগ না করে পুলিশ রিপোর্ট জরুরি। যদি কোনো ছোটখাট । দুর্ঘটনা ঘটে তবে ইন্স্যুরেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ওই সময়কার ঘটনার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে রাখতে হবে