
ছবি: সংগৃহীত
গত ক‘দিন ধরে কাশ্মীরের পেহেলগাওয়ের সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টা মাথা থেকে সরছেই না। মনে হলেই গা শিউরে উঠছে, মনটা ভিজে যাচ্ছে। ঘটনাটা মানতেই পারছি না। পৃথিবীর সকল মানবিক হৃদয় সম্পন্ন মানুষের মন যে আমার মতই ভারাক্রান্ত হয়েছে, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। অনেকের মতো একটি প্রশ্ন মনে হচ্ছে ক্ষনে ক্ষনে, কি করে পারলো ওরা এতটা জঘন্য হতে? এতটা নৃশংস হতে? কি ধরনের হিংস্র প্রাণী ওই মনুষ্য রূপী জন্তু গুলো? ওই গুলোকে জীবজন্তুর সাথেই বা তুলনা করছি কেন? তাতে তো জীব জন্তুদেরও অপমান হয়! মূলত উগ্রবাদীদের কাজই হলো হিংসা, উগ্রতা, বিদ্বেষ এসব ছড়ানো।
আর এই উগ্রতা ছড়ানো তখনই বেগমান হয় যখন ধর্মটাকে ঠিকমত লেফটে দেয়া যায় বা ব্যবহার করা যায়। সারা পৃথিবীতে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের সন্ত্রাসী কর্মকা- আজ এক মহা আতঙ্কের নাম। আর এসব উগ্রবাদীরা মানুষ হত্যার জন্য বেছে নেয় জনাকীর্ণ স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, ট্রেন, উপাসনালয়, পর্যটন কেন্দ্র, অনুষ্ঠান স্থল, প্রভৃতি স্থান এদের টার্গেট পয়েন্ট।
মোদ্দা কথা যেখানে লোক সমাগম বেশি সেখানে ওরা থাবা হানে। যেকোনো ভাবে নিরীহ মানুষ মারা এদের প্রধান উদ্দেশ্য। ভাবা যায় এদের কি বিকৃত আর জঘন্য মানসিকতা! নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা এদের প্রধান কাজ! জম্মু-কাশ্মীরের এই যে টানাপোড়েন বা যুদ্ধাবস্থা এ সমস্যা চলছে তো চলছেই। দু‘দেশের দেশের ভৌগোলিক সমস্যার আড়ালে ধর্মীয় মৌলবাদী তথা উগ্রবাদীদের এমন নৃশংসতা দু‘দেশের সম্পর্ক আরো নেতিবাচক করে তুলছে। কিন্তু সন্ত্রাসীরাতো সন্ত্রাসী, এদের দেশ নেই, ধর্ম নেই, এমন ভাবেই সবার ভাবা উচিত।
ভারত পাকিস্তান দু’পক্ষ বা তাদের সবাইকেই একট্টা হতে হবে সন্ত্রাস দমনে। অন্তত এদের নিয়ে এ পক্ষ- ও পক্ষ খেললে সন্ত্রাসীরাই মদদ পায় এবং এদের প্রশ্রয় দেয়া হয়। তাই সন্ত্রাসীদের দমাতে হলে, নির্মূল করতে হলে সবাইকে মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। এদের সাথে কোন আপোষ নেই। সামাজিকভাবে ওদের রুখতে হবে। চিহ্নিত করতে হবে। ধর্মের নামে এদের প্রতি কোন অনুকম্পা নয়, আশ্রয় প্রশ্রয় নয়। মনে রাখতে হবে ওরা হিন্দু না, ওরা মুসলমান না, ওরা বৌদ্ধ না, ওরা ক্রিশ্চান না, ওরা কেবলই সন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসী। ওরা মানবতা ও মানবিকতার শত্রু।
লেখক: অভিনেতা।