বুধবার, ০১ মে ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

বিশেষ সম্পাদকীয়

আনন্দ ছড়িয়ে পড়–ক  বিশ্বের সবখানে

শাহাব উদ্দিন সাগর

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ৫ এপ্রিল ২০২৪

আনন্দ ছড়িয়ে পড়–ক  বিশ্বের সবখানে

ছবি: সংগৃহীত

দেখতে দেখতে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের মাস, পবিত্র মাহে রামাদান। আগামী মঙ্গল বা  বুধবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের জীবনে আনন্দের এ দিনটি উদযাপিত হয় শুভ্র-শ্যামল আবেশে।

টানা এক মাসের সিয়াম সাধনার পর মুসলমানরা ঈদগাহের বিশাল পরিসরে গিয়ে তাদের হৃদয়ের পরিশুদ্ধ প্রেম-ভালবাসা ভাগ করে নেয় অপর মুসলমানের সঙ্গে। সেইসঙ্গে বিশ্বের সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষের প্রতি কামনা করে মুক্তি ও কল্যাণ। সবাই এক বাক্যে বলে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়–ক বিশ্বের সবখানে। বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়াক সব মানুষ।  
পৃথিবী থেকে করোনা অতিমারি ফিরে গিয়েছে বললেই চলে। ফলে এবার মন খোলে মানুষ কোলাকুলি করতে পারবে। তাই এবার ঈদের ময়দানে উচ্চকিত হবে রহীমের বন্দনা। আবার যেন ফিরে না আসে এই মহামারী, আর যেনো কোনো অশুভ শক্তি গ্রাস না করে এ পৃথিবীকে সেই প্রার্থনায় মাবুদের কুদরতি পায়ে নত হবে কোটি কোটি মুসলমানের উন্নত শীর। 
বিশ্বজুড়ে যখন ঈদের আগমনী বার্তা, শাওয়ালের একফালি বাঁকা চাঁদের দিকে তাকিয়ে যখন কোটি কোটি মুসলিম তখন ফিলিস্তিনে রক্ত ঝরছে মুক্তিকামীদের। ইসরায়েলি হায়েনাদের অত্যাচার আর বর্বরতায় প্রতিদিনই রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে এ জলপাই জমিন। পবিত্র রমজানে যেখানে ইবাদতের ছওয়াব অগণিত সেই বাইতুল মোকাদ্দাসের বরকতি জমিন অপবিত্র করছে অভিশপ্ত ইহুদি সেনারা। মুসলমানদের প্রথম কিবলা পবিত্র এ মসজিদে তারপরও জড়ো হচ্ছেন ফিলিস্তিনি জমিনি ফেরেস্তারা। যে বুকে আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রেম, যেই শরীরে মিশে আছে কারবালার লহু তাদের কি করে দমায় দখলদার ইহুদিরা? তাইতো সেখানে পবিত্র কদরের রাত্রি নামে যেন চৌদ্দশত বছর পূর্বের রাসুলে আকরাম (সা.) এর সময়ের মতো করে। রাসুলের (সা.) স্মৃতি বিজড়িত এই আঙ্গিনায় স্বমহিমায় উচ্চারিত হয় ‘আল্লাহু আকবার ধ্বনি’। 
করোনার চার বছরে পৃথিবীতে বহু পরিবর্তন ঘটেছে। দেশে দেশে হয়েছে বিপর্যয়, উত্থান আর পতনের খেলা। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান। দেশটিতে প্রথম থেকেই  পুতিন বাহিনী দখলাভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। অনেক সামরিক-বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে, ইউক্রেনের যে ক্ষতি হয়েছে সেটি অকল্পনীয়। যুদ্ধ কবে থামবে তার কোনো আলামত দেখছে না জাতিসংঘও। এই যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে ইতোমধ্যে বড় ধরণের ধাক্কা দিয়েছে। সেই ধাক্কায় ভারসাম্য হারাচ্ছি আমরাও। বাজারে নিত্যপণ্যে আগুন লেগেছে। সেই আগুন কীভাবে নিভবে তার মন্ত্র আমাদের জানা নেই। 
পবিত্র লাইলাতুল কদরে মুসলিম উম্মাহ আরশের মালিকের নিকট যত অভাব-অভিযোগ জানিয়েছেন বা জানাচ্ছেন। যত অপ্রাপ্তি-অপ্রতুলতার কষ্ট লাঘবে সাহায্য চেয়েছেন বা চাচ্ছেন সমস্ত শক্তির আঁধার আল্লাহর কাছে। মসজিদে মসজিদে হয়েছে বিশেষ দোয়া-মুনাজাত। সেই মুনাজাতে বাদ যায়নি ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন কিংবা উগান্ডার ক্ষুধার্ত শিশু থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা বাংলাদেশের কোনো বয়োবৃদ্ধও। সবার একটাই ফরিয়াদ ‘হে রাজাধিরাজ- পৃথিবীর সকল সমস্যার সমাধান করে দাও। জুলুম-নির্যাতন আর অন্যায়ের কবর রচনা করে ন্যায়-সাম্য আর শান্তির ফায়সালা করে দাও। পবিত্র রামাদানের এই শিক্ষাকে আমাদের জীবনের মূল উপজীব্য করো। আমরা যেন রমজানের ত্যাগের আলোয় আলোকিত হয়ে হতে পারি ইহকাল ও পরকালের কামিয়াব বান্দা। আমীন। ইয়া রাব্বাল আলামীন।’ 
শুভেচ্ছা
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নবযুগ’র পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভাকাঙ্খীসহ সকলে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।-সম্পাদক
 

শেয়ার করুন: