বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

খাইরুল ইসলাম পাখি’র কিচিরমিচির-তেরো

ভেদাভেদ ভুলে একসাথে দাঁড়াই 

খাইরুল ইসলাম পাখি

প্রকাশিত: ২৩:১০, ৫ এপ্রিল ২০২৪

ভেদাভেদ ভুলে একসাথে দাঁড়াই 

ছবি: সংগৃহীত

গত ক’দিন আগে নিউইয়র্ক শহরের ওজন পার্ক এলাকায় নিজ গৃহে খোঁদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। এমন একটি হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকে আচ্ছন্ন এবং হত বিহ্বল প্রবাসী বাঙালিরা।

সর্বোপরি এই বিশ্ববিখ্যাত পুলিশ বাহিনীর সদস্যের দ্বারা সংগঠিত এমন একটি ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ অন্যান্য কমিউনিটির মানুষজনও। সবার মুখে মুখে একটি কথাই ঘুরে বেড়াচ্ছে “উই ওয়ান্ট জাস্টিস”। সবারই চাওয়া এই ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার। মানুষের অভিমত এ ঘটনায় সম্পূর্ণরূপে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। যা কাম্য নয়, গ্রহনযোগ্য নয়।
গত সোমবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ড্রাইভারসিটি প্লাজায় দ্বিতীয়বারের মতো জড়ো হয়েছিল বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষ। সবারই কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদ, নিন্দা আর ন্যায় বিচারের দাবি। ক্ষোভে দুঃখে সমবেত জনতার মুখে মুখে কিছু প্রশ্ন বারম্বার উচ্চারিত হচ্ছিল। কেন এক তাজা তরুণ পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে নিজেই এমনভাবে নিহত হলেন? কি এমন প্রয়োজনে পুলিশ নিজের মা ভাইয়ের সামনে উইনের বক্ষে পরপর ছয়টি গুলি ছুঁড়ল? কি করেছিল সে, যাতে করে পুলিশকে এমন নির্মম ঘটনা ঘটাতে হলো?

এই প্রতিবাদ সমাবেশে বাঙালি কমিউনিটির সর্বসাধারণের এমন একাট্টা হয়ে ন্যায় বিচার দাবি করার বিষয়টি প্রমাণ করেছে আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা। ভিন্ন দল ও মতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের চিত্রটিও এক অসাধারণ উপমার সৃষ্টি করেছে বৈ কি! সেই সাথে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক কাতারে দাঁড়ানোর বিষয়টিও ছিল লক্ষ্য করার মতো। বিপদে আমরা যে এক হয়ে যেতে পারি, সমকণ্ঠে রুখে দাঁড়াতে পারি, এই প্রতিবাদ সমাবেশ তাই প্রমাণ করলো।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক শহরের এখন কমবেশি পাঁচ লক্ষ বাংলাদেশির বসবাস। সবাই দেশ ছেড়ে প্রবাসী হয়েছে অপেক্ষাকৃত উন্নত ও নিরাপদ জীবনের আশায়। কিন্তু এই উন্নত দেশে এমন পরিস্থিতি কারো কাম্য নয়। আমরা সবাই চাই নিরাপত্তা, চাই শান্তি। চাই উইন রোজারিওর মৃত্যুর রহস্যের সঠিক তদন্ত এবং ন্যায়বিচার। কোন মানুষের এহেন মৃত্যু, কোন পরিবারের এহেন বিপর্যয়, কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। আমাদের সবার সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে নিজেদের স্বার্থরক্ষা বা অধিকার রক্ষায়। বাঙালি জানে কিভাবে স্ব অধিকার রক্ষা করতে হয় একসাথে হয়ে, এক প্রাণে মিলে। আমরা আর শোক হতাশায় নিমজ্জিত হতে চাই না। তাই আমরা বিপদে শোকে এভাবেই একে অপরের হবো। আমাদের সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তা কারোর দ্বারা বাধাগ্রস্থ হোক, তা আমরা হতে দেব না। আমরা চাই ন্যায্য অধিকার, সমঅধিকার। চাই সম্মান আর মর্যাদা। উইন রোজারিওর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করে, রোজারিও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। হোক ন্যায়বিচার। এটাই আমাদের বজ্রকঠিন দাবি এবং ঐকান্তিক আশা।
 

শেয়ার করুন: