ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকলেও মাইক্রোসফট এশিয়ান দেশটিতে তার কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ১০ হাজারে নিয়ে গেছে।
চীনা ভাষার উইচ্যাটে গত সপ্তাহের এক পোস্টে বলা হয়েছে, চীনে মাইক্রোসফটের প্রায় ৯ হাজার কর্মী আছে। এবং আগামী বছর তা ১০হাজার ছাড়িয়ে যাবে। মাইক্রোসফট দৃশ্যত ইংরেজি ভাষার মিডিয়াতে এ তথ্যটি প্রকাশ করেনি।
মাইক্রোসফটের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং উংদংয়ের পোস্টটির অনুবাদে দেখা যায় যে তিনি বলেছেন, মাইক্রোসফট বৈজ্ঞানিক গবেষণা, কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিকাশ এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে প্রযুক্তির প্রয়োগ দৃঢ়ভাবে বাড়ানোর জন্য, চীনা উদ্ভাবনের সাথে তাল মেলাতে উর্বরা ভূমিতে সম্পর্ক দৃঢ় করা অব্যাহত রাখবে।
মাইক্রোসফট কয়েক দশক দৃশ্যত তার প্রতিদ্বন্দ্বী গুগল ও মেটার বিপরীতে গিয়ে চীনা বাজারে তার অবস্থান সম্প্রসারিত করছে। অথচ ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গুগল ও মেটা চীনা বাজার ছেড়ে চলে আসছে। মার্কিন টেক প্রতিষ্ঠানগুলৈার চীনের সাথে ব্যবসা নিয়ে আমেরিকার উভয় দলের আইনপ্রণেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সিনেটর মারকো রুবিও (রিপাব-ফ্লো) মাইক্রোসফটের সম্প্রসারণ নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, চীনে ব্যবসা কার্যক্রম সম্প্রসারণকারী যেকোনো কোম্পানিই হয় চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সৃষ্ট হুমকির ব্যাপারে নির্বোধ কিংবা গণহত্যা, আমেরিকানবিরোধী সরকারের সাথে কাজ করতে কোনো সমস্যা অনুভব করে না।
এছাড়া বেশ কয়েকজন সিনেটর অ্যাপেলের সাথে সম্পৃক্ত চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর অবরোধ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে মাইক্রোসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ বড় বড় টেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনপ্রণেতাদের বাগাড়ম্বড়তার বিরুদ্ধে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।
আর হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাবেক সহকারী সেক্রেটারি পল রোজেনউইগ মনে করছেন, মাইক্রোসফট তেমন কোনো অনুসন্ধানের মুখে পড়বে না। কারণ মার্কিন সরকার ও সামরিক বাহিনীর সাথে মাইক্রোসফটের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মাইক্রোসফটের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতার কারণে চীনের সাথে কার্যক্রম নিয়ে মাইক্রোসফটকে খুব বেশি চিন্তায় থাকতে হবে না।
তবে তিনি বলেন, অবশ্য তা সত্ত্বেও চীনে মাইক্রোসফটের অব্যাহত সম্প্রসারণ ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, মাইক্রোসফট বা অন্য কোনো আমেরিকান কোম্পানি চীনে বেশি বিনিয়োগ করলে তারা ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সঙ্ঘাতের শিকার হতে পারে। চীনা কমিউনিস্ট সরকারের সাথে সহযোগিতাকারী কোনো আমেরিকান কোম্পানির জন্য বিষয়টি স্বস্তিদায়ক হবে না।
মাইক্রোসফট তার চীনা ভাষার পোস্টে জানিয়েছে, তারা বেইজিং, সাংহাই ও সুঝুউতে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের ক্যাম্পাস আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করবে। বর্তমানে চীনের ১৩টি নগরীতে অফিস রয়েছে মাইক্রোসফটের।
মাইক্রোসফটের সম্প্রসারণকে স্বাগত জানিয়েছে চীনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়া গ্লোবাল টাইমস।
গুগল ২০১০ সালে চীন থেকে তার সার্চ পণ্য প্রত্যাহার করে নেয়। আর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম চীনে কার্যক্রম পরিচালনা করে না।