
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে চলমান অভিবাসীবিরোধী অভিযানের ফলে ১২ লাখ অভিবাসী শ্রমশক্তি থেকে হারিয়ে গেছে। যেকোনো সময় ধরা পড়ে আটক হতে পারে, এমন শঙ্কায় তারা কাজে আসছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর যারা কাজে আসছে, তারাও সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকবে।
এই যেমন লিডিয়ার কথা বলা যেতে পারে। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল ভ্যালিতে টমেটো খামারে কাজ করেন। তিনি কিশোর বয়সে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন। ২৩ বছর পর এখন তিনি আশঙ্কায় আছেন যে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট যেকোনো সময় তার জীবনকে শেষ করে দিতে পারে।
তিনি পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আপনি যখন গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন, তখন তারা এসে আপনার কাগজপত্র চাইতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ দরকার। আমাদের পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য, বাড়িভাড়া দেওয়ার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে যখন মহাআড়ম্বরে লেবার ডে পালিত হচ্ছে, তখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন নীতির ফলে দেশের শ্রমশক্তিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
তারা বলেন, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি অভিবাসী শ্রমশক্তি থেকে উধাও হয়ে গেছে। এদের মধ্যে যেমন অবৈধ লোকজন রয়েছে, একইভাবে বৈধ বাসিন্দাও আছে।
মার্কিন কর্মীবাহিনীর প্রায় ২০ ভাগ হলো অভিবাসী। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, কৃষিকাজ, মাছচাষ, বনায়নে জড়িত শ্রমিকদের ৪৫ শতাংশ অভিবাসী। আর সকল নির্মাণশ্রমিকের প্রায় ৩০ শতাংশ হলো অভিবাসী। এছাড়া সার্ভিস শ্রমিকদের ২৪ শতাংশ অভিবাসী।
ট্রাম্পের দমন অভিযানের কারণে কয়েক বছরের মধ্যে এবারই অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। আর ২০২৩ সালে তা সর্বকালের সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছিল। তখন সংখ্যাটি ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত লাখ লাখ অবৈধ শ্রমিককে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি ‘বিপজ্জনক অপরাধীদের ডিপোর্ট করার দিকে নজর দিয়েছেন।’ কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, আইসিইর গ্রেফতার করা বেশির ভাগের কোনো ধরনের অপরাধমূলক রেকর্ড নেই।
এদিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের ডালাসস্থ লেবার ইকোনমিস্ট পিয়া ওরেনিয়াস বলেন, অভিবাসীরা সাধারণত মার্কিন চাকরি প্রবৃদ্ধিতে অন্তত ৫০ শতাংশ অবদান রাখে।
বর্তমানে টেক্সাসে কর্ন ও তুলা তোলার সময় হয়েছে। কিন্তু খামার থেকে ফসলগুলো তোলার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাবে না বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। একই অবস্থা ক্যালিফোর্নিয়াতে। সেখানে লেবু, অ্যাভোকাডো, কফি তোলার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।