শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

আজব হলেও গুজব নয়

সাত এক ডিমের দাম ১৪০০ ডলার!

হাবিব রহমান

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ১৯ আগস্ট ২০২৩

সাত  এক ডিমের দাম ১৪০০ ডলার!

ফাইল ছবি

ডিম একটি অতি উপকারী বস্তু। এটি গরিবে খায়, মধ্যবিত্ত খায়, বড়লোকও বাদ যায় না। ডিম খেলে দেহে আমিষের অভাব পূরণ হয়। সকালে নাস্তার টেবিলে একটা সিদ্ধ ডিম হলে বেশ জমে। স্কুলে বাচ্চাদের টিফিন বক্সে সিদ্ধ ডিম আদরে জায়গা পায়। সকালে ভাজা ভাতের সঙ্গে একটা ডিম পোচ, দুপুরে, রাতে ভাতের সাথে ডিম আলুঘাটি অনেকের প্রিয় খাবার। ডিম ভাজিও কম প্রিয় না। ভাল তরকারি নেই তাতে কি, পিয়াজ, কাঁচামরিচ দিয়ে একটা ডিম ভাজি হলেই হয়ে যায় ফাটাফাটি বাঙালী খাবার। বাড়িতে হঠাৎ খাবারের সময় কুটুম এসে হাজির। খাবারে তেমন কিছু নেই। গরম গরম একটা ডিম ভাজি অতিথির পাতেদিতে পারলেই গিন্নির চোখে খুশির ঝলক। শীতকালে শহরে হাফ বয়েল, ফুল বয়েল ডিমের খুব চাহিদা। মোট কথা ডিম আমাদের অতি প্রয়োজনীয় এবং প্রিয় খাবার।

শুধু খাদ্য হিসেবে নয়, ক্রোধ, ক্ষোভ বা ঘৃণা প্রকাশের জন্যও ডিমের ব্যবহার হতে দেখা যায়। কারও প্রতি ডিম ছুড়ে মারা হয় ভালোবেসে নয় অবশ্যই। পঁচা ডিমের সদ্গতি হতে দেখা যায় অজনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার মুখে কিংবা বুকে নিক্ষেপ করে। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে আমাদের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ বা শিল্পীগণকে স্বাগত জানাতে পঁচা ডিমের ব্যবহার ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। আইনের প্রয়োগে বিশেষ করে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় আসামীর পশ্চাৎদ্বার দিয়ে সিদ্ধ গরম ডিম ঢুকিয়ে  কথা বের করার পদ্ধতি বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

ডিম নিয়ে কথার শেষ নেই। তুই পাবি ঘোড়ার ডিম, তোর ভাগ্যে আছে অশ্বডিম্ব, তুই একটা ভিতুর ডিম- ডিম নিয়ে এরকম ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ যেমন হর-হামেসা কপালে জোটে।

ডিম নিয়ে এত কথা বল্লাম বিশেষ একটি কারণে।

ডিম নিয়ে কুসংস্কার প্রচুর। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের ডিম খেতে দিতে চান না অভিভাবকেরা। ডিম খেয়ে পরীক্ষা দিতে গেলে নাকি পরীক্ষায় ডিম, মানে গোল্লা পাওয়ার আশঙ্কা থাকে!

ঘোড়ার ডিম বলে একটি কথা বাংলা ভাষায় চালু আছে। এই ডিম কেউ চোখে দেখেননি, খাওয়া তো দূরের কথা। অথচ আমরা কথায় কথায় ঘোড়ার ডিম শব্দটি ব্যবহার করে থাকি। এটা অস্তিত্বহীন কিন্তু অর্থবোধক।

ডিম নিয়ে এত কথা বল্লাম বিশেষ একটি কারণে। আর তা হলো, ডিম কখনও কখনও খাবারের পাত থেকে উঠে আসে খবরের কাগজে। ঘটনাটা তাহলে শুনুন।

সম্প্রতি একটি ডিম ১৪০০ ডলারে বিক্রি হয়েছে। যার দাম বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকারও  বেশি। আমরা সাধারণত ডিম যে রকম আকারে দেখি সেটি তেমন নয়। এই ডিমটি ছিল পুরোপুরি গোলাকার। খবর ডেইলি মেইলের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউজ রিডার জ্যাকলিন ফেলগেট মেলবোর্নের উলওয়ার্থসের একটি সুপারমার্কেট থেকে ডিম কিনেছিলেন। তিনি বলেন, কার্টনে আমি একটি গোলাকার ডিম পেয়েছিলাম।  গুগল দ্রুত বুঝতে পেরেছিল যে ডিমটি বিলিয়নের মধ্যে একটি।

ওই নিউজ রিডার আরও বলেন, ডিমটি এক বিলিয়নের মধ্যে একটি। নিলামে এটির দাম উঠে ১৪০০ ডলার।

ডিমটি নিয়ে বিশেষজ্ঞরাও কথা বলেছেন। তারা বলেন, এমন ডিম সাধারণত দেখা যায় না। এটি এক বিলিয়নের মধ্যে একটি পাওয়া যায়।

ডিমটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মজার খোরাক হয়ে ওঠে।

মজা করে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী লিখেছেন, বাচ্চাদের এত দামি ডিম না খাওয়াই ভালো।

হতভাগ্য মুরগিটি এতদিন এটি লুকিয়ে রেখেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আরেকজন।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালে একটি অক্ষত এলিফ্যান্ট বার্ড ডিম ৬৬ হাজার ৬৭৫ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছিল। যেটি ক্রিস্টি নিলাম হাউস নিলামে তুলেছিল। এদিকে ডাইনোসরের ডিমের একটি ভালো নমুনার দাম প্রায় উঠেছিল ১৬০০ পাউন্ড।

শেয়ার করুন: