ছবি - নবযুগ
বাংলাদেশ সোসাইটির সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক এ সংগঠনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২ নভেম্বর রোববার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ট্যারেস অন দ্য পার্কে অনুষ্ঠিত হয় সুবর্ণজয়ন্তীর এ উৎসব। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর উদ্বোধনী বক্তব্য ও বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। পরে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম।
তিনি বলেন, এই দীর্ঘ ৫০ বছরে বাংলাদেশ সোসাইটি প্রবাসীদের ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধন দৃঢ় করতে যে ভূমিকা রেখেছে, তা আমাদের গর্বের বিষয়। সূবর্ণজয়ন্তীর এ আয়োজনে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে সাফল্য মন্ডিত করায় সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও গোল্ডেন এইজ হোম কেয়ারের সিইও শাহ নেওয়াজ বলেন, নির্বাচিত সেলিম-আলী পরিষদের অন্যতম বড় প্রতিশ্রুতি ছিল সোসাইটির নিজস্ব আরও একটি ভবন নির্মাণ। সম্প্রতি আমরা ৪.৯ মিলিয়ন ডলারে নতুন ভবন ক্রয়ের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি গর্বের অর্জন হবে। তিনি ভবন ক্রয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমান, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, স্টিভেন রাগা, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ইভেন্টের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন দেওয়ান, উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ডা. মইনুল ইসলাম মিয়া, উদযাপন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ডা. হামিদুজ্জামান, চিফ ইভেন্ট কো-অডিনের্টর ফখরুল আলম, সহ-সভাপতি ও যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামরুল, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিব আবুল কালাম ভূইয়া, প্রধান সমন্বয়কারী হারুণ উর রশীদ, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদেক, নতুন প্রজন্মে প্রতিনিধি নামিরা মেহেদী, ভিক্টর ঘোষ, অনিকা জেবা ও শেখ আনাম প্রমুখ।
অ্যাসেম্বলিম্যান ও মূলধারার অন্যান্য রাজনীতিবিদদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তাদের সাইটেশন ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা গ্রহণ করেন সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ। অন্য্যদিকে সোসাইটির পক্ষ থেকে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রথমবারের মতো সোসাইটি পদক দেওয়া হয়। সাংবাদিকতায় পদক পেয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্যাহ, সাংস্কৃতিকে সেলিমা আশরাফ, শিক্ষায় মোশাররফ হোসেন খান, কমিউনিটিতে অবদানের জন্য কামাল আহমেদ ও কাজী আজহারুল হক মিলন, মানবসেবায় দ্য অপটিমিস্ট, খেলাধুলায় সাঈদুর রহমান ডন। দাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ, সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, ডা. হামিদুজ্জামান, ডা. বিল্লাহ, ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া, ডা. মইনুল ইসলাম মিয়া, আব্দুর রব মিয়া, মজিবুর রহমান, আজমল হোসেন কুনু, আব্দুর রহিম হাওলাদার, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, ফখরুল আলম, নূরুল হক, রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সউদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রয়াত পুলিশ অফিসার দিদারের পরিবারকে সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় বাংলাদেশ সোসাইটির প্রয়াত নেতৃবৃন্দকে। সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি স্মরলিকা প্রকাশ করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বাদশা বুলবুল, বাউল সম্রাট কালা মিয়া, প্রতিক হাসান, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী রানো নেওয়াজ, শাহ মাহবুব, অনিক রাজ। এছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করেন নৃতাঞ্জলির শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন সোসাইটির কর্মকর্তা জামিল আনসারি, গীতা পাঠ করেন প্রশান্ত। জাতীয় সংগীত পরিবেশনে সায়েম।অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শাহ নেওয়াজসহ যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ২৩ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্য, সংস্কৃতি ও কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করে আসছে। এটি নিউইয়র্কভিত্তিক প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় সামাজিক সংগঠন হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

















