শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

নিউইয়র্কে গণসংবর্ধনায় বিপুল মানুষের উপস্থিতি

নারীর কর্মঘণ্টা কমাতে চান জামায়াতের আমির

নবযুগ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪:৩৮, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

নারীর কর্মঘণ্টা কমাতে চান জামায়াতের আমির

ছবি - নবযুগ

কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ‘কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন’-এর আয়োজনে গণসংবর্ধনায় তিনি এ ঘোষণা দেন। তবে তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে নারী-পুরুষের মধ্যে তা বৈষম্য সৃষ্টি করবে কিনা, সেই প্রশ্ন কেউ কেউ তুলেছেন।

শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা যদি সুযোগ পাই, মায়েদের বাড়তি আরেকটু সম্মান করব, সেটা হবে তাদের প্রতি ইনসাফ। একজন মা তাঁর সন্তানকে জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন; আবার ক্ষেত্র বিশেষে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আমারও আট ঘণ্টা, তারও আট ঘণ্টা, এটা কি অবিচার নয়? আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশাল্লাহ তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেব। মা হিসেবে সন্তানের হক আদায় করার জন্য এবং মা হিসেবে তাঁকে সম্মান করার জন্য। আমরা যদি আট ঘণ্টার জায়গায় পাঁচ ঘণ্টা করি, তাহলে মায়েরা এতই কমিটেড যে; তারা চিন্তা করবে সরকার যে সম্মান আমাদের দিয়েছে, আমাদের উচিত আট ঘণ্টার কাজ পাঁচ ঘণ্টায় সেরে ফেলা।’
আলোচনা-সমালোচনা
জামায়াত আমিরের বক্তব্যের উদ্দেশ্য নিয়ে অনেকে ফেসবুকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। জামায়াত আমির মা নিয়ে বললেও তারা ভাবছেন, এটা হবে নারীদের ঘরে বন্দি করার প্রথম ধাপ। তাছাড়া নারী-পুরুষের মধ্যে কাজ নিয়ে বৈষম্যও তৈরি হবে। অনেকে কর্মঘণ্টা কমানোর চেয়ে কর্মজীবী নারীদের জন্য পরিবহন সমস্যার সমাধান, কর্মপরিবেশ ঠিক রাখা, শিশুদের দিবাযতœ কেন্দ্রের ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তার মতো বিষয়ে নারীবান্ধব পরিকল্পনার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কেউ আবার জামায়াত আমিরের বক্তব্যকে নারীদের প্রতি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, মায়েদের প্রতি সহমর্তিতা থেকে তিনি এ কথা বলেছেন।
লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাম আব্দুস সালাম প্রশ্ন করেছেন, কর্মজীবী নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে বেতনও আনুপাতিক হবে কিনা। বেতন যদি কমানো হয়, নারীরা সেই ‘ইনসাফ’ চায় কিনা। আর বেতন না কমালে পুরুষ সহকর্মীরা এই বৈষম্য মানবে কিনা। আর এর ফলাফল হবে মেয়েদের চাকরিই দেওয়া হবে না। তাদের কর্মক্ষেত্র থেকে দূরে রাখার জন্য এর চেয়ে সফল কোনো নীতিমালা হতে পারে না।
এনসিপির সাবেক নেত্রী নীলা ইসরাফিল ফেসবুকে লিখেছেন, নারীকে রক্ষা করার নামে কর্মঘণ্টা কমানো আসলে তাঁকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ও নির্ভরশীল করে তোলে। যদি কেউ সত্যিই নারীর জীবন সহজ করতে চান তবে অফিসে পাঁচ ঘণ্টা নয়; রাস্তা, পরিবার ও কর্মক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। 
রাজনীতি বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান  লিখেছেন, আমির এমন উদ্ভট প্রতিশ্রুতি কেন দিচ্ছেন? তাঁর কাছে মনে হয়, এটা আসলে  বিএনপিকে বিপদে ফেলার জন্য করছে জামায়াত।
ফারজানা মাহবুবা নামে একজন অ্যাক্টিভিস্ট লিখেছেন, একজন মা-কে বাধ্যতামূলক কর্মঘণ্টা পাঁচ করে দেওয়া হবে, এমন হলে কেউ আর আর চাকরিই দেবে না।
 

শেয়ার করুন: