
ছবি: সংগৃহীত
এ মাসেই নিউইয়র্কে আমাদের কমিউনিটিতে অনুষ্ঠিত হলো একাধিক সংগীতানুষ্ঠান তথা কনসার্ট। এসব অনুষ্ঠানের শ্রোতা সাধারণত আমাদের জেন-জি জেনারেশন। যারা অনেকেই এদেশে জন্ম নিয়েছেন আর কেউ বা ছোটবেলা থেকে এখানে বড় হচ্ছেন।
এরা সবাই কিন্তু অনেকটাই ভিন্ন ডিসিপ্লিন আর ভিন্ন মূল্যবোধে বিশ্বাসী বা গড়ে উঠছেন। তাই আমাদের মতো জ্যেষ্ঠদের অনেক অনিয়মের প্রতি এদের কোন সমর্থন নেই। মোদ্দা কথা এরা অনেক অর্গানাইজড এবং ডিসিপ্লিনড এটা নিঃসন্দেহ। তাই অনেক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে যেয়ে এরা যে অনিয়ম আর অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়াদি দেখতে পায় তাতে তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়।
আমার মেয়ে আর ওর কিছু বন্ধু প্রায়ই নানা অনুষ্ঠানে যায়। ড্রামা থেকে শুরু করে নানা ধরনের কন্সার্ট, কমেডি শো, আর্ট এক্সিবিশন, মুভি, সবই দেখে ওরা। ওদের মুখেই শুনছিলাম হতাশার কথা। ওরা বলছে আমাদের কমিউনিটির অনুষ্ঠান মানেই মিস ম্যানেজমেন্টে ভরপুর। অনভিপ্রেত বিষয়াদি আর দেরিতে শুরু হওয়া। ওদের একজন বলছিল আমাদের কমিউনিটির আয়োজনে কোন কনসার্ট হলে, ওরা নিজেরাও এখন নির্ধারিত সময়ের দেড় দু‘ঘন্টা পরে যায়। কারণ প্রোগ্রাম কখনোই টাইমলি শুরু হয় না বরং কয়েক ঘন্টা দেরিতে শুরু হয়। সুতরাং অযথা সময় নষ্ট করার তো মানে হয় না। শুধু ওদের কথা বলব কেন, আপনি আমি সবাই এসব বিষয়ের জানি। আমরা সবাই কমবেশি এই দেরি করে শুরু অনুষ্ঠান হওয়া চর্চার চাক্ষুষ সাক্ষী।
কিন্তু আমরা চাইলেই এই অপবাদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। এর জন্য আমাদের সদিচ্ছাই যথেষ্ট। পরিতাপের বিষয় হলো আমরা এমন একটি দেশে এসেও শিখিনা। কিংবা এখানকার ভালোটা নেই না। এই আমরাই যখন নিজেদের গ-ির বাইরে যাই তখন কিন্তু সজাগ, শটান, সিজিল থাকি।
নিজের কাজের জায়গায় বা কর্মস্থলে সময় রক্ষা করে চলি, ময়লাটা ঠিক জায়গায় ফেলি, আস্তে কথা বলি। কিন্তু জ্যাকসন হাইটসে এলেই যেই লাউ সেই কদু! আমাদের মগজটাই বদলে যায় বা কাজ করে না। ‘খাইসলত’ বলে শব্দটা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। দয়া করে আসুন সময়ের কাজ সময়ে করি, ছ’টার গাড়ি ছ’টায় ছাড়ার চেষ্টা করি। যা পারি না সেটা যেন শিখে করি। একেবারেই না পারলে যারা পারে বা জানে তাদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ইভেন্টগুলো ম্যানেজমেন্ট করি!
লেখক: অভিনেতা।