ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীতে কত শত ধর্ম আছে এ পরিসংখ্যান আমরা কেউই সঠিকভাবে জানি না। জানি শুধু গুটি কয়েক ধর্মের নাম। কিন্তু নিজের ধর্ম নিয়ে মানুষের আদিখ্যেতার শেষ নেই। আর নিজের ধর্মের সুখ্যাতি ও স্তুতি করতে যেয়েই অন্যের ধর্মকে ছোট করে দেখা শুরু হয়। শুরু হয় তর্ক এবং এই তর্ক থেকে আস্তে আস্তে শুরু হয় যুদ্ধ। ধর্মের নামে এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ধর্মের জন্ম থেকে শুরু হয়েছে যা আজ অবধি বিদ্যমান। এ পর্যন্ত এই ধর্মযুদ্ধের বলি যে কত শত কোটি মানুষ হয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই।
যুগে যুগে মানুষ সভ্য হয়েছে কিন্তু ধর্মের নামে রেষারেষি, হানাহানি থামেনি। প্রতিটি ধর্মের মাঝে আবার রয়েছে নানামুখী মত ও বিভাজন। তাই আন্ত ধর্ম কলহ লেগেই আছে সবখানে। সবাই সবার মতে অনড়। মরে যাবে তবু অন্যকে সহ্য করবে না। ধর্মের নামে এই যে অন্ধত্ব এটাই ভয়ানক। বিশেষ করে ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি ও ব্যবসা করে তারা মানুষকে অন্ধ করে রাখতেই ভালোবাসে। তারা শিক্ষা এবং বিজ্ঞানকে দূরে রাখে যাতে মানুষের চোখ বা কান বন্ধ থাকে। যাতে করে মানুষকে বোকা বানানো যায় বা ধোঁকা দেয়া যায়।
সব ধর্মইতো অনেক অনেক ভালো কথা বলে। এসব ভালোকে মেনে বা ধারণ করে অগণিত মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে জীবন কাটান। অন্যদিকে পৃথিবীতে বহু মানুষ আছে যারা কোনো ধর্মই পালন করে না। কারো যেমন ধর্ম কর্ম করার অধিকার আছে, তেমনি কেউ যদি তা করতে না চায়, সে অধিকারও তার আছে। সবাইকে সবার মত করে বাঁচতে দেয়াই সম অধিকার। সবারই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও বাঁচার অধিকার আছে। তাই একে অন্যের ধর্মের প্রতি বা মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেই সংঘাত, হিংসা-বিদ্বেষ অনেকাংশে কমে যায়।
অন্যকে সম্মান করলে সম্মান কমে না বরং বাড়ে। আর ধর্ম তো মানুষ জন্মসূত্রেই পায়, এতে অর্জনের কিছু নেই। এ ধর্মে জন্মেছে বলে এ উত্তম আর ওই ধর্মে জন্মেছে বলে সে অধম, সেটা কেন হবে? এতে তো কারো হাত নেই। মনে রাখা ভালো যে, ধর্মকে পুঁজি করে যারা রাজনীতি ও ব্যবসা করে তারা উস্কানি দেবেই। ওদের কুদর্শনে পা না রাখাই উত্তম। ধর্মের নামে ওরা অধর্ম করলেও আমরা তা করব না। বিশ্ব শান্তির জন্য আমরা নিজেদের ধর্ম বা মতের পাশাপাশি অন্যের ধর্ম বা মতকেও সম্মান করবো, এটাই হোক ব্রত।
লেখক: অভিনেতা।

















