মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

বিশেষ সম্পাদকীয়

কুরবানির ত্যাগে জাগ্রত হোক সবার বিবেক

শাহাব উদ্দিন সাগর

প্রকাশিত: ২০:১৭, ১৪ জুন ২০২৪

কুরবানির ত্যাগে জাগ্রত হোক সবার বিবেক

ছবি: সংগৃহীত

মহান আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় সামর্থ্যবান মুমিন বান্দারা নির্দিষ্ট সময়ে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কুরবানি দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে ত্যাগের মহান শিক্ষা। অথচ আমাদের দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অসুস্থ প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়, বিশেষ করে এ সময়ে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম হয় আকাশচুম্বী।

কুরবানিকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ীরা জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়। এতে করে অনেকে প্রতারণার শিকার হন। টাকার লেনদেন ব্যাপকহারে বাড়ার কারণে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্যও বাড়ে। ফলে মানুষের ঈদ আনন্দ ভেস্তে যায়। তাই এসব বিষয়ে সুদৃষ্টি দিয়ে আইনি তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন।
কুরবানির পশু ক্রয়ের সময় কার থেকে কে বড় পশু নেবে, তা নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। অমুকে ১ লাখ টাকা দিয়ে গরু নিয়েছে, তাই তমুককে ধার করে হলেও ২ লাখ টাকা দিয়ে গরু নিতে হবে! এরকম লোকদেখানো অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। কারণ কুরবানির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা; মনের পশু ও আমিত্বকে জবাই করা। কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, মনের পশুরে করো জবাই/পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই।’ কিন্তু এ কাজটি করেন কয়জন? সবাই তো কেবল পশু জবাইয়ে ব্যস্ত। এতে কুরবানির যে মূল উদ্দেশ্য, তা থেকে সরে যাচ্ছি আমরা।
ঈদুল আজহা এলেই দেশের কোথাও কোথাও নতুন বিবাহিত কনের পরিবারের কাছ থেকে বরের পরিবার কর্তৃক নানা কৌশলে জোরপূর্বক গরু-ছাগল নেওয়ার অসুস্থ রীতি এখনো প্রচলিত আছে, যা সত্যিই নিন্দনীয়। যদি কনের বাবার বাড়ি থেকে গরু-ছাগল অথবা টাকা দেওয়া না হয়, তাহলে সেই নববধূকে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে থাকে। অনেকে এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাও করে, যা আমরা প্রতিনিয়তই গণমাধ্যমে দেখি। সমাজের সচেতন মহল ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি অনুরোধ, এসব নিন্দনীয় রীতি নিষিদ্ধে ও প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সমাজকে কলুষতামুক্ত করুন। কুরবানির ত্যাগে জাগ্রত হোক বিবেক।
 

শেয়ার করুন: