মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

অযথা বেশি কথা বলা বদভ্যাস  ও ক্ষতিকর 

খাইরুল ইসলাম পাখি

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ৭ জুন ২০২৪

অযথা বেশি কথা বলা বদভ্যাস  ও ক্ষতিকর 

ছবি: সংগৃহীত

ধরুন কোন আড্ডায় বসেছেন, ঘটনাচক্রে দুই একজনকে পেয়ে যাবেনই যাদের কথার চোটে আপনার কান ঝালাপালা কিংবা গরম হয়ে যাবে। কেউ অযথাই কথা বলতে থাকেন, সেটা প্রাসঙ্গিক হোক বা না হোক। আবার কেউ, কারো কোন ইম্পরট্যান্ট কথার মাঝখানে অবলীলায় ঢুকে পড়েন, যাকে আমরা বাঁহাত ঢুকিয়ে দেয়া বলি। কেউ আবার, সে যে বিজ্ঞ এটা প্রমাণ করার জন্য এটা ওটা সেটা দিয়ে কথার খিচুড়ি পাকাতে থাকেন। যা স্বাদ না হলেও তার কিছু যায় আসে না। আবার কেউ বা তার বড়লোকি ফলাতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। 

এরকম বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা সবারই হয় বা আছে। কথায় আছে ‘থামতে জানতে হয়’ কিন্তু যারা কথার পিঠে কথা দিয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলতে থাকেন তারা কিছুতেই আউট হতে চান না। অন্যদেরও যে ব্যাট করতে দেয়া উচিত এটা তাদের বোধে থাকে না। গোটা ম্যাচটাই একা একাই খেলেন। তার এই বাচালতা অন্যদের যে চরম বিরক্তি এনে দেয়, এটা বোঝার ঘিলু তার নেই। নির্লজ্জের মত কথা বলতেই থাকেন।
আবার কেউ এমন ভাবে কথা বলতে থাকেন, যেখানে সবাইকে তার ছাত্র বানিয়ে রাখেন। আর তিনি বনে যান শিক্ষক। অন্যদেরকে মূর্খ ভাবেন হয়তো। এমনটি করতে যেয়ে নিজেও যে অন্যদের কাছে মূর্খ বনে যান, সেটা খেয়াল থাকে না তার। সবাই তো আর সব বিষয়ে জানেন না। কিন্তু কিছু কিছু লোক যেন সবই জানেন! তাদের পায়ের তলা থেকে চুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত মগজ। এই গিজগিজে মগজ নিয়ে তাদের সমস্যা হয় হয়তো। তাই বকবক করতেই থাকেন। তাদের এই বকবকানি আশে পাশে থাকা সবাইকে অসহ্য করে ছাড়ে। কিন্তু তারা বাকবাকুম করতেই ব্যস্ত থাকেন।
কথায় আরো আছে ‘শুন্য কলসি বাজে বেশি’। যার ফলে যাদের কলসিতে জ্ঞানপানি যত কম তার কলসির আওয়াজ তত বেশি। নির্বোধের মতো কথা বলতেই থাকেন। এরকম বহুপ্রকার বাচাল ও চাপাবাজ আমাদের চারপাশে ভর্তি। জ্যাকসন হাইটসের মতো জায়গায় গেলে এসব প্রাণী বেশি চোখে পড়বে। এছাড়াও তাদের বসবাস আমাদের সমাজের সর্বত্র। এরা নিজেরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে জানেন না, জানেন না থামতেও। এদের কথার অত্যাচারে জনজীবন ঝালাপালা।
আসুন এদের থামতে বা থামাতে সাহায্য করি। এদের বোঝাই অযথাই বেশি কথা বলায় কোন কৃতিত্ব নেই, স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয় মারাত্মক ভাবে। প্রয়োজনে এদের বলি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে। এদেশে মনো চিকিৎসায় অনেক অনেক আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। 
আমিও আর বেশি কথা না বলে এবার থামি। কারণ বেশি কথা বলায় সংসারেও অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। আমরা কে না চাই একটুখানি শান্তি ও স্বস্তি। তাই শুধু অন্যদের  টার্গেট না করে নিজেদের কথাও ভাবি। প্রয়োজনে নিজেকেও শোধরাই। নিজের ঘর থেকে শুরু করতে হবে অভিযান। কেননা সবার জীবনে, সমাজ ব্যবস্থায় এবং পৃথিবীতে শান্তি রক্ষা বা শান্তি ফেরাতে এমন অভিযানের কিন্তু কোন বিকল্প নেই।
লেখক: অভিনেতা।
 

শেয়ার করুন: