শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান মুহিতের

নবযুগ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান মুহিতের

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান মুহিতের

বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রচার এবং বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুতে সুস্থ বিতর্ক উৎসাহিত করার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দেশ, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মধ্যে শান্তির সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ডিজিটাল মিডিয়ার শক্তিকে কাজে লাগাতে পারি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির  সংস্কৃতি বিষয়ক বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশীপ রেজুল্যুশনের উপর অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের  ফোরামে বক্তব্য প্রদানকালে এমন মন্তব্য করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

মঙ্গলবার সভাটি আহবান করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসি। উদ্বোধনী অধিবেশনে আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল ফর পলিসি, ইউনেস্কোর নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক এবং আইটিইউ-এর জাতিসংঘ বিষয়ক প্রধানসহ অনেক উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে ডিজিটাল যুগে শান্তির সংস্কৃতির প্রচার থিমের অধীনে একটি প্যানেল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার সভাপতিত্ব করেন  জাতিসংঘে নিযুক্ত কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আলেয়া আহমেদ সাইফ আল-থানি। এতে সদস্য রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রযুক্তি দূত, শান্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর এবং গুগলের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।

শান্তির সংস্কৃতির প্রচারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে সাধারণ পরিষদের সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন,  ডিজিটাল যুগে শান্তির সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অনলাইন ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন যা সম্মান ও সহনশীলতাকে উৎসাহিত করবে; ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং বৈষম্যের মোকাবিলা করবে এবং নতুন প্রযুক্তির অপব্যবহারের ঝুঁকি মোকাবেলা করবে।

রাষ্ট্রদূত মুহিত তার স্বাগত বক্তব্যে চলমান বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ  মোকাবেলায় শান্তির সংস্কৃতি লালন করার অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতার ওপর  জোর দেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তার প্রথম ভাষণে বলেছিলেন ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার। এই শান্তির মধ্যে সারা বিশ্বের সকল নর-নারীর গভীর আশা আকাঙ্খা মূর্ত হয়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এই উদ্ধৃতি তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন যে, জাতির পিতার এই শান্তির দর্শনই পরবর্তীতে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি গঠন করে এবং ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির রেজুল্যুশন প্রবর্তন করতে অনুপ্রাণিত করে।

এই বছরের থিমের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন যে, ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন জ্ঞানরাজ্যে আমাদের অভূতপূর্ব প্রবেশাধিকার দিয়েছে এবং অবারিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে, তেমনি এটি বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তিকর তথ্য, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, অসহিষ্ণু এবং বিভাজনমূলক আখ্যানের একটি ¯্রােতও উন্মোচন করেছে। এই প্রসঙ্গে তিনি মিয়ানমার  থেকে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের উৎখাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, এসময়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যাপকভাবে ব্যহার করা হয়েছিল। এই পটভূমিতে তিনি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিশেষ করে তরুণদের জন্য সাবধানতা অবলম্বনের উপর জোর দেন। কারন হিসেবে তিনি বলেন, এমন সাবধানতার অভাব সারাবিশ্বে আমাদের সম্প্রীতি অর্জনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বিপন্ন করে দিতে পারে।

শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টার উপর ডিজিটাল বিভাজনের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মুহিত ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সকলের ন্যায়সঙ্গত প্রবেশিধাকার নিশ্চিত করার এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরতার ওপর জোর  দেন। তিনি টেকসই উন্নয়ন ও শান্তির জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি ও সমাজের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত অনলাইনে নারী ও  মেয়েদের চ্যালেঞ্জগুলিও তুলে ধরেন এবং সকলের জন্য একটি নিরাপদ এবং প্রবেশযোগ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জেন্ডার ডিজিটাল বিভাজন দূরীকরণের আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন: