
ছবি: সংগৃহীত
কঠোর অভিবাসনবিরোধী অভিযানের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি শ্রমশক্তি বিপর্যয়ে পড়েছে এবং এর ফলে সরবরাহজনিত ধাক্কা থেকে খাদ্য ঘাটতির একটি বড় শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এমনটাই বলা হয়েছে ফেডারেল রেজিস্টারে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আমেরিকান শ্রমিকরা কৃষিকাজে নিয়োজিত হতে একেবারেই আগ্রহী নয়। তাছাড়া তাদের ওই দক্ষতাও নেই। খামাম শ্রমশক্তি অল্প সময়ের মধ্যে ১০০ ভাগ আমেরিকান হয়ে যাবে বলে কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিনস যে দাবি করেছিলেন, এই বক্তব্য তার বিপরীত।
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘অবৈধ অভিবাসীদের আগমন প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বৈধ শ্রমশক্তির অভাবের কারণে উৎপাদন খরচ সামাল দেওয়া ভয়াবহভাবে কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে করে দেশীয় খাদ্য উৎপাদন এবং আমেরিকান গ্রাহকদের জন্য দামের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।’
এতে আরো বলা হয়, ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ অ্যাক্টের কারণে এই সমস্যা আরো প্রকট হতে পারে।
এই বিধিটি এইচ-২এ কর্মসূচির মাধ্যমে কম মজুরিতে অতিথি শ্রমিক আনার চেষ্টা করছে। এর ফলে সব খামার শ্রমিকের মজুরি সার্বিকভাবে কমে যেতে পারে।
ইকোনমিক পলিসি ইনস্টিটিউটের অ্যাটর্নি ড্যানিয়েল কস্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি কিভাবে কাজ করবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। উল্লেখ্য, তিনি এইচ-২এ কর্মসূচি নিয়ে কাজ করেন।
ট্রাম্পের শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, এই সংকট থেকে বের হওয়ার একটি উপায় হলো ফসল তোলার জন্য কম মজুরিতে আরো বেশি বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করা।
তবে এ ব্যাপারে শ্রম বিভাগ কিংবা হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এইচ-২এ কর্মসূচির আওতায় বিদেশি কৃষিশ্রমিকদের এক বছরের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মীদেরকে ভিসা স্পন্সরকারী ওই নিয়োগকর্তার জন্য কাজ করতে হয়। তবে ওই কমৃীরা দেশীয় শ্রমিকদের মতো ওভারটাইম পাওয়ার মতো মৌলিক শ্রমিক সুরক্ষা পায় না। সমালোচকেরা অতীতে এই কর্মসূচিকে এক ধরনের দাসত্ব হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
১৯৮০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত এইচ-২এ কর্মসূচিটি কর্মীদের অভাব পূরণের জন্য মাঝে মাঝে ব্যবহৃত একটি চেষ্টা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পাঁচ কৃষিশ্রমিকের একজন এইচ-২এ ভিসাধারী। এটি ২০ বছর আগের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগকর্তাদের প্রথমেই আমেরিকান শ্রমিকদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা নিরবিচ্ছন্নভাবে এইচ-২এ কর্মসূচির আওতায় কর্মীকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, এইচ-২এ কর্মীদের দর কষাকষি করার অধিকারও নেই। ফেডারেল নির্দেশিকা তাদের মজুরি নির্ধারণ করে।