
ছবি: সংগৃহীত
মিয়ামিতে গত মাসে কিউবার নাগরিক জুলিও ডেভিড পেরেজ রডরিগ্রেস এসেছিলেন ইমিগ্রেশন শুনানিতে। তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করার তার আইনি অধিকারের জন্য এসেছিলেন। কিন্তু শুনানির পর একটি এলিভেটর থেকে সাদা পোশাকের অফিসাররা গ্রেফতার করে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই দেশে এসেছিলাম, স্বাধীনতার জন্য... কিন্তু এই দেশে কী হচ্ছেছ?’
\
শুধু জুলিও পেরেজই নন, গত সপ্তাহ থেকে সারা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের সাথে একই ধরনের আচরণ করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসীদের ধরে পাইকারি হারে বহিষ্কার করার কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলে আমেরিকান পরিবারগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
গত জানুয়ারিতে সিটফানি আলীর পরিবার নিউ অরলিন্সের উপকণ্ঠে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) অফিসারদের সাথে সাক্ষাত করে। অফিসাররা তাদেরকে জানান যে তারা গ্রেফতারের আওতায় নন, বহিষ্কারও করা হবে না। তবে হাডসনের অভিবাসন আদালতে শুনানির সময় অ্যাজেন্টদের সাথে রাখতে হবে।
কিন্তু হাডসনে পৌঁছামাত্র তাদেরকে আদালতে নয়, বরং বহিষ্কারের জন্য প্রস্তুত করা আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৪ বছর বয়স্ক ও নারী ১০ বছর বয়স থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন। তাকে এভাবে আটক করতে দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আইসিই নজিরবিহীন মাত্রায় অভিবাসীদের বহিষ্কার করার জন্য কাজ করছে। তারা প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার অভিবাসীকে আটক করার বড় ধরনের মিশনে মাঠে নেমেছে।
তারপরও অভিবাসীদেরকে সিস্টেমের ওপর ভরসা রাখতে বলা হচ্ছে। তারা শুনানিতে হাজির হতে, নোটিশ পালন করতে, নির্দেশ মানতে এবং পরবর্তী সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে বলছে। কিন্তু যে সিস্টেম আপনার সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারছে না, তার মূল্য কতটুকু?
আইসিই অ্যাজেন্টরা সাদা পোশাকে আদালতের ভেতরে অপেক্ষায় থাকে, মামলাগুলো মীমাংসার রায় ঘোষণার সাে সাথে গ্রেফতার করে, তখন এর ওপর আ¯স্থ থাকে কিভাবে?
আবার এসব আইসিই অ্যাজেন্ট কেবল সাদা পোশাকেই থাকছে না, একইসাে তারা মাস্ক পরে পরিচয় লুকাচ্ছে, এমনকি শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী টাটু পর্যন্ত আঁকছে। এসব অ্যাজেন্ট লোকজনকে আদালতকক্ষে থামাচ্ছে, কাজে যাওয়ার সময় ধরছে, এমনকি চার্চে গেলেও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না।
আপনি আদালতে যান বা না যান, কোনো কিছুই হচ্ছে না। স্কুলে যাওয়ার পথেও আটক করার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কাজ যেভাবে হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে যে আপনার যদি নথি না থাকে, তবে ট্রাম্প প্রশাসন আপনাকে বহিষ্কার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আপনি অপরাধ করে থাকুন কিনা তা তারা বিবেচনায় আনবেই না।
সম্প্রতি এনবিসি নিউজ ট্রেকার জানিয়েছে, বর্তমানে যে ৪৮,৬৭৪ জন অভিাবসীকে আটক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৩০.৬ শতাংশ কোনো অপরাধের সাথে জড়িত ছিল বলে আদালতের রায় রয়েছে। আর ২৬.৫ শতাংশের পেন্ডিং ক্রিমিনাল অভিযোগ রয়েছে।
এই অবস্থার বিরুদ্ধে আমেরিকান লোকজন ক্ষুব্ধ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আমেরিকান ভয়েজের নির্বাহী পরিচালক ভ্যানেসা কারডিনাস। তিনি বলেন, অভিবাসন প্রশ্নে ট্রাম্প দেশকে ভুল দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এটি কোনো সমাধান বয়ে আনবে না।