ছবি: সংগৃহীত
আগামী ৯ জুন, রোববার বিকাল সাতটায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে সিরাজুল আলম খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে। ওই স্মরণসভায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলমত-নির্বিশেষে প্রবাসীদের উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা আটটায় জ্যামাইকার একটি রেস্টুরেন্টে সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডা. মুজিবুল হক। সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব শাহাব উদ্দীন।
সভায় বক্তারা বলেন, সিরাজুল আলম খান স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা নিউক্লিয়াসের অন্যতম সদস্য, যিনি ১৯৬২ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি গরিব, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মেহনতি মানুষের দু’মুঠো অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের নিশ্চয়তা এবং স্বাধীনতার স্বাদ মানুষকে দিতে ব্যর্থ হলে ব্রিটিশ, পাকিস্তানিদের উত্তরাধিকারপ্রাপ্ত সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তৎকালীন নব্য স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের দাবি উপেক্ষিত হলে তারই পরিণতিতে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এখনো আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। দুর্নীতি, কালোটাকার মালিক, দেশের টাকা বিদেশে পাচারকারী লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে দেশ পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের বাইশ পরিবারের হাত থেকে আজ বাইশ হাজার লুটেরা পরিবারের জন্ম হয়েছে। এর থেকে দেশকে পরিত্রাণের জন্য সিরাজুল আলম খানের মতো দেশপ্রেমিক ও রাষ্ট্র চিন্তাবিদের মতো লোকজনের দেশের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন ছিল। তার চলে যাওয়া রাষ্ট্রের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তারপরও তাদের রেখে যাওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক পুস্তিকা, জীবনাদর্শ নিয়ে যদি আমরা দল ও মতের ঊর্ধ্বে উঠে আলোচনা করতে পারি, তাহলে আমাদের নতুন প্রজন্ম এবং জাতি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানবে। ভোগের জন্য নয়, ত্যাগের রাজনীতি করতে উজ্জীবিত হবে। রাষ্ট্র গঠনের সঠিক দর্শন ও দিকনির্দেশনা সম্পর্কে জানতে পারবে।
তারা আরও বলেন, আজকের দিনে এই দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন মানুষের খুব অভাব। তাই আমরা মনে করি, জাতির স্বার্থে মওলানা ভাসানী, জাতীয় চার নেতাসহ সিরাজুল আলম খান ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠকদের বীরত্বগাথা আমাদের নতুন প্রজন্মের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত জরুরি। এসব নেতৃত্বের বিভিন্ন চিন্তাধারা, রাজনৈতিক দর্শন গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজে লাগানো উচিত।
সভায় বক্তব্য দেন ল’ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট এম মতিউর রহমান, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, লিগ্যাল কনসালট্যান্ট মুজিবুর রহমান, নাজির আহমেদ চৌধুরী, সরোয়ার হোসেন, আব্দুর রহিম প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি