
প্রতিকী ছবি
ভন্ডামিরও একটা সীমা আছে কিন্তু বাংলাদেশের কতিপয় সুশীলদের ভন্ডামির কোনো শেষ নেই। প্লাটফর্ম বিহীন দলছুট রাজনীতিবিদ, কতিপয় নীতিহীন অনাদর্শিক রাজনীতিবিদ, কিছু বিদেশী দালাল, এনজিও এক কথায় বলতে গেলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে এবং উন্নয়নে যাদের কোন বিশ^াস নেই, যারা দেশের উন্নয়নকে চোখে দেখে না এমনকি বিশ^ব্যাংকের প্রতিবেদন প্রকাশের পরও যারা নিরব থাকে। বিশে^র নামী-দামী পত্র-পত্রিকাগুলো যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে প্রতিবেদন ছাপে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে এমন কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ‘অপ্রতিরোধ্য শেখ হাসিনা’ হেড লিখে সম্পাদকীয় লিখে, তারপরও বাংলাদেশের এসব ভ- প্রতারক চরিত্রহীন রাজনীতিবিদদের বোধোদয় হয় না। তারা এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল জামাত-বিএনপির সাথে তাল মিলিয়ে একই সুরে কথা বলছে।
আজ বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে, যেসব উন্নয়ন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিশেষ করে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর স্বৈরাচারি, ক্ষমতা দখলকারী, মিলিটারি ডিকটেটর জিয়া এরশাদ করার মত সাহস দেখাতে পারেনি। এমনকি স্বৈরাচারি সৃষ্ট দল বিএনপিও দু’দুবার ক্ষমতায় বসে এসব উন্নয়ন কর্মকা- করার দুঃসাহস দেখাতে পারেনি-পেরেছে লুটপাট করতে। ৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আবার ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসে একনাগারে ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশের যে উন্নয়ন সাধন করেছে এখনও ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন কর্মকা- চলছে এটি একটি নিতান্ত দুঃসাহসিক চ্যালেঞ্জিং কাজ। কোন বাপের বেটার পক্ষে এমন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়ে বাস্তবায়ন করে জনসম্মুখে হাজির করা বা দৃশ্যমান করার মত শক্তি, সাহস, সক্ষমতা একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাই দেখাতে পেরেছেন। এটি তোদের মত চরিত্রহীন লম্পট রাজনীতিবিদদের জন্য চরম লজ্জার একটি বিষয়। এই দেশতো শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের লক্ষ কোটি সমর্থকের নয়-এই দেশ সব জাতিগোষ্ঠী, সব রাজনৈতিক আদর্শে বিশ^াসী বাঙ্গালী জাতিগোষ্ঠীর, এদেশের উন্নয়ন করা, জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করে সেই সুফল ভোগ করার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার কাজ এদেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের, কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেছে ওই সব নেতারা কি করেছেন এই দেশ ও জাতির জন্য?
সেনাবাহিনীর কিছু উন্মাদ বিএনপি জাতীয় পার্টির সাথে মিলে মিশে স্বাধীনতা প্রিয় দেশপ্রেমিক বাঙ্গালী জাতির মধ্যে বিভক্তির দেয়াল রচনা করে দিয়েছিল। আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী যারা সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী চেতনায় শানিত হয়ে জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়ে গেছে সেই জাতীয়তাবাদী সেনাবাহিনীকে আওয়ামী লীগের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে আওয়ামী লীগকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করেছিল স্বৈরাচারি জিয়াউর রহমান। এমনকি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও বিভক্তি তৈরি করেছিল জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারি জাতীয় বীরদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মেরেছিল এই জিয়াউর রহমান। মোটামুটি দেশকে আওয়ামী লীগ শূন্য করার এজে-া নিয়ে জিয়া পরাজিত পাকিস্তানের পক্ষেই কাজ করছিল। তার শেষ রক্ষা হয়নি অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে তাকে শাস্তি পেতে হয়েছে দেশ বিরোধী অপকর্মের জন্য। শেষ পর্যন্ত তার লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি ছাই ভস্ম ছাড়া। ঠিক একই এজে-া নিয়ে মাঠে এসেছিলেন তারই পতœী খালেদা জিয়া একই জায়গায় বসে, যে জায়গায় মইনুল রোডের বাসা থেকে হতে অপকর্ম করেছিল ঠিক একই জায়গায় বসে খালেদা জিয়াও একই অপকর্ম শুরু করেছিলেন। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের ২৪০০০ নেতা-কর্মীর জীবন কেড়ে নিয়েছে, আওয়ামী লীগের ৪ জন এমপিকে খুন করেছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা করে ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ প্রধান তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ১১টি আর্জেস গ্রেনেড হামলা করেছিল খালেদা জিয়া। এত অপকর্মের পরও খালেদা জিয়ার মর্মান্তিক পতন হয়নি। স্বামীর মত আজও বহাল তবিয়তে আছেন তবে ১০ বছরের দ-প্রাপ্ত আসামী হয়ে।
আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমাতায় ২০২৩ সালে সরকার তার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করলে ১৫ বছর পূর্ণ হবে। যে উন্নয়ন এদেশে হচ্ছে আমাদের জাতীয় আয় যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে জাতিসংঘের দেয়া এসডিজি এবং এমডিজি অর্থাৎ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল এবং মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনের সমর্থ শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে মধ্যম আয়ের দেশের তারিকায় উঠে আসার পথে দাঁড়িয়েছে। ২০২৬ সাল নাগাদ জাতিসংঘের সব শর্ত পূরণ সাপেক্ষ বাংলাদেশ এই লক্ষে এই লক্ষে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা যায়। এসব অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে একমাত্র শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য সাহস, উদ্যোগ এবং দেশপ্রেমের কারণে। তিনি তো জাতির পিতার কন্যা, তার মত দেশপ্রেম এদেশে অন্য কোন রাজনীতিবিদ বা নেতার নেই। এ দেশের মুক্তির জন্য তার পিতা ১৪ বছর জেল খেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, পাকিস্তানের কারাগারে ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আটক ছিলেন। এমনকি তার জন্য পাকিস্তানী জান্তা কবর খুঁড়েছিল তবুও তিনি আপোষ করেননি। শেখ হাসিনা পিতার জৈষ্ঠ কন্যা হিসেবে পিতার বর্ণাঢ্য রাজনীতিক জীবন দেখেছেন। পিতার জেল জুলুম নির্যাতনের চিত্র দেখেছেন, কখনও পিতার সাথে থেকে মা, বাবা, ভাইবোনসহ নিজেও নির্যাতন সহ্য করেছেন। এভাবে পিতার সান্নিধ্য থেকে তার মধ্যে দেশপ্রেম সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটেছে, তিনি দেখেছেন পাকিস্তানী শাসকদের শোষণ আর নির্যাতনের বর্বরোচিত ভয়াবহ্ চিত্র। তাই তিনি শিখেছেন পিতার কাছ থেকে কিভাবে শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে একটি জাতিকে টিকিয়ে রাখতে হয়। কিভাবে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে একটি জাতির গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হয়। তার বাবা যুদ্ধ করেছিলেন, সংগ্রাম করেছিলেন পাকিস্তানী মিলিটারি ডিক্টেটরের বিরুদ্ধে। আর শেখ হাসিনাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে স্বাধীন দেশের ঔপনিবেশিক পাকিস্তানপন্থী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি জামাতের বিরুদ্ধে। এরা মিলে মিশে দেশকে আবার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দেশকে জঙ্গীবাদী-তালেবানী রাষ্ট্রে পরিণত করে একটি ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পথে হাটছে।
গণতন্ত্রের কথা বরে মানুষকে মিথ্যা সুড় সুড়ি দিয়ে যেনতেনভাবে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ক্ষমতা দখল করতে চায়। গণতন্ত্রের কথা বলাটা নিতান্ত মিথ্যাচার, বিএনপি-জামাত তো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নয়, গণতন্ত্রকে হত্যা করে বিএনপির জন্ম হয়েছে স্বৈরাচারি জিয়া। আর এই হত্যাকা-ের ফসলকে লালন করছে খালেদা জিয়া। আর জামাত দেশ বিরোধী অপশক্তি ১৯৭১ সালে পাকি হানাদারদের সহযোগীতা করেছিল আমাদের দেশের মানুষদের খুন করার জন্য, নারিদের নির্বিচারে ধর্ষণ করার জন্য। সুতরাং এই দুই অপশক্তি কোন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হতে পারে না। এরা দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিহিংসার আগুনে জ¦লছে তাই তারা দেশের উন্নয়ন চোখে দেখে না। উন্নয়ন তাদের পছন্দ হয় না উন্নয়ন দেখলে তাদের গায়ে আগুন ধরে যায়, তাদের লুটপাটের পুরাতন কাহিনী নিজেদের মানুষপটে ভেসে উঠে। আর উন্নয়নের কথা উচ্চারণ করলে প্রথমেই শেখ হাসিনার নাম মুখে নিতে হবে, আওয়ামী লীগের নাম মুখে নিতে হবে এই দুটি নামেই তো তাদের বড় বিপত্তি। এই দুটি নামকে তারা ভীষণ ভয় পায়। আর যে দেশের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান, এই দেশকে ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে তাদের এত অপচেষ্টা আজ সেই দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি হচ্ছে শেখ হাসিনার হাত ধরে, যা তারা মোটেই মানতে রাজী নয়, তবে উন্নয়নের সুবিধাভোগী হতে আপত্তি নেই।