
ছবি: সংগৃহীত
কি অবাক কান্ড, চোর ডাকাত দেখলে মানুষ পেটায়, পুলিশে দেয় বা কখনো কখনো মেরেও ফেলে! কিন্তু ঘুষখোরদের ঘুষ দেয়ার পরেও তোষামোদ করে, যেন কার্যসিদ্ধি হয়। যেন ঘুষখোরদের মর্যাদাই আলাদা! তাই তো আমাদের সমাজে তাদের তোড়জোড়ও বেশি! শুধু কি তারা? তাদের আন্ডা বাচ্চা এবং চৌদ্দগুষ্টির হাব ভাবও সেইরকম! পরের ধনে পোদ্দারি যাকে বলে। চুরির টাকায় যত
বড়াই। ঘুষের টাকায় বড় কোরবানি দেয়া থেকে শুরু করে, মেয়ের বিয়ে, হজ্ব পালন, জন্মদিন, ইত্যাদি ইত্যাদি কত কিছুই না করে স্যুট টাই টুপি পরা ঘুষখোর গুলো! এদের মত নির্লজ্জ কি হয় মানুষ হয়? এদের কানকাটা বললেও ভুল হবে। এদের যেন কানই নেই। এদের মানুষ ঘুষ আর লাই দিতে দিতে মাথায় তুলেছে।
আজকের সমাজে ঘুষখোর আর ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি কাউকে তেমন আর বিচলিত বা অবাক করে না। ঘুষ যেন আজকাল হালাল ও বৈধ কিছু। ঘুষের রাজ্য অর্থাৎ সরকারি চাকরিরতো মজাই আলাদা। একবার পেলে সহজে তা আর হারানোর ভয় নেই। কাজও তেমন করা লাগে না। অফিসে কখন বা কবে যাব না যাব সব নিজের মর্জি। ঘুষবানিজ্য যেন ঢোল বাজিয়ে উপভোগ করার বিষয়! মজাই মজা, আরাম আর আরাম। আর এমন অনায়াসে উপরি কামানোর মজা জগতের আর কোথায় আছে কি? সুরসুর করে টাকা আসে। সরকারের টাকাও আমার টাকা, আর জনগণের টাকাও আমার টাকা। তাই সরকারি চাকুরীতে চুরি চামারি করে কারো পকেট কাটছি, এমন বলাটা কিন্তু অন্যায়।
পরিসংখ্যান ছাড়াই বলা যায় আমার দেশের ঘুষখোরের সংখ্যা কোটির ঘরে॥ সেই হিসেবে প্রায় প্রতি ঘরেই এমন চোর ডাকাতের বসবাস। আমরা এই অন্যায় কারীদের সাথেই বসত করি, এদের লালন করি।
কিন্তু এদের ধরিয়েও দেই না কেন? চোর আর ডাকাতের সাথে এদের অমিল কই? নিজেদের স্বার্থেই এ প্রথা বা চলন রুখতে হবে, ভাঙতে হবে, সংস্কার করতে হবে, এমন জোরালো দাবিও তো দেখি না। কিন্তু বাস্তবতা হলো এদের চুরির অর্থে সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। অন্যদিকে রাজনীতিও ঘুষখোর, চোর, নষ্টদের দখলে। এসব নিয়ে সবার সোচ্চার হতে হবে বৈকি! চুরি ডাকাতির উপর তো কোন সমাজ দাঁড়াতে পারে না।
আজকের এই অশুদ্ধ সমাজকে বদলাতে হলে নিজের ঘরের ঘুষখোরকে ঘাঁড় মটকাতে হবে আগে। এদের ধাক্কা মেরে ছুঁড়ে ফেলতে হবে রাস্তায়। বলতে হবে চিৎকার করে, এই যে দেখুন আমার ঘরের ঘুষখোর। এদের বয়কট করা ছাড়া কিন্তু কারো পরিত্রাণ নেই এটাই কিন্তু মহাসত্য।
লেখক: অভিনেতা।