রোববার, ১৯ মে ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

প্রথম ধাপের প্রচারণা শেষ, কাল ভোট

যে কোনো মূল্যে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকাবে ইসি

নবযুগ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ৭ মে ২০২৪

যে কোনো মূল্যে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকাবে ইসি

ছবি: সংগৃহীত

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে সোমবার (৬ মে) মধ্যরাতে। এই ধাপে ১৫০ উপজেলায় সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ১০ জেলার ২৪ উপজেলার দুর্গম চার শতাধিক কেন্দ্রে মঙ্গলবার (৭ মে) ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানো হবে।

বাকি কেন্দ্রগুলোতে ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর প্রস্তুতি রয়েছে কমিশনের। চলতি বছরের ২৩ মার্চ প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে তফসিল ঘোষণা করে ইসি। তবে পরে দুটি উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়।এদিকে দলীয় প্রতীকে এবার নির্বাচন না হওয়ায় ভোটের মাঠে কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। যে কারণে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অধিপত্য বিস্তার ও মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন স্থানে। এতে ভোটের মাঠে বিরাজ করছে উত্তাপ। ইসি অবশ্য প্রভাব বিস্তার ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মন্ত্রী-এমপিদের ওপর বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি স্পিকারের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেইসঙ্গে মাঠে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। আচরণবিধি মানাতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারিক হাকিম। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সম্প্রতি বলেন, যেকোনো মূল্যে উপজেলা নির্বাচন হবে প্রভাবমুক্ত। সরকারের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রভাবশালীরা এই নির্বাচনে প্রভাব খাটালে কমিশন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নেক দৃষ্টি দিয়ে সরকারের অতি সুবিধাভোগী কিছু ব্যক্তি এ নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন। ওই সমস্ত পদে যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করব; দয়া করে আপনারা আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনি এলাকার ভোটার, আপনি আসবেন- ভোট দিবেন চলে যাবেন। আপনি যে পর্যায়ে আছেন- আপনি আপনার মান ইজ্জত রক্ষা করবেন। আপনার ইজ্জত আপনি যদি রক্ষা না করেন তাহলে কিন্তু যে কোনো মুহূর্তে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। এর দায় কিন্তু আমরা নেব না। আপনারাই সেটা বহন করবেন। আপনারা নিজের মর্যাদায় আসীন থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। 

ইসি রাশেদা বলেন, কোনো প্রার্থী অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভঙ্গ করলে আমরা কিন্তু নির্বাচনের মুহূর্তেও প্রার্থিতা বাতিল করে দিব। ভোটের দিন যে কোনো নৈরাজ্যমূলক আচরণ করলে আমরা কিন্তু নির্বাচন স্থগিত করব, নির্বাচন বাতিল করব, প্রার্থিতা বাতিল করব। 

প্রার্থী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনো রকম উচ্ছৃঙ্খলতা, বিশৃঙ্খলতা, সহিংস আচরণ, ভোট কেন্দ্র দখল করার মতো দুঃসাহস করবেন না। আপনার অবৈধভাবে যে ব্যালটই রাখেন না কেন আমাদের কাছে তথ্য গেলে ও প্রমাণ পেলে সেই ভোট বাতিল করে দেব যেকোনো মুহূর্তে।

মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকাতে সতর্ক অবস্থান: নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো উপজেলায় সংঘাত-সহিংসতা এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। আর নানা ঘটনার প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন ও অভিযোগ আসছে নিয়মিত। এর মধ্যে অনেক প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইসিতে। ইসি থেকে বারবার বিধি মেনে প্রচারের কথা বলা হলেও মন্ত্রী-এমপিদের অনেকেই তা অবজ্ঞা করে চলেছেন। 

কমিশন সূত্র জানায়, বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্যেই বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ও বিতর্ক ছাড়াই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করেছে বর্তমান কমিশন। ওই নির্বাচনে সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রী-এমপিদেরও ছাড় দেয়নি ইসি। শোকজ, তলব, তিরস্কার ও মামলা করা হয় তাদের অনেকের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া কঠোর পদক্ষেপের পরও বাগে আনতে না পারা এমপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের মতো সর্বোচ্চ পদক্ষেপও নিয়েছিল কমিশন। এবারের উপজেলা নির্বাচনেও সেই ফর্মুলাই বেছে নিচ্ছে কমিশন। 

ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তার না করতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বারবার মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। বেপরোয়া এমপিদের লাগাম টানতে এরই মধ্যে সংসদ সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর পরও অনেকেই কমিশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার তথ্য আসছে। এ অবস্থায় মাঠ প্রশাসনের মনোবল চাঙ্গা রাখতে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় নির্বাচনের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।

৪২৪টি কেন্দ্র দুর্গম হিসেবে চিহ্নিত: ১০টি জেলার ২৪টি উপজেলার দুর্গম কেন্দ্রে ব্যালট আগের দিন পাঠানো হবে। এসব উপজেলা হলো- কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজীবপুর; মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া; হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, সরাইল; সন্দ্বীপ; রাঙ্গামাটির রাঙ্গামাটি সদর, কাউখালী, জুড়াছড়ি ও বরকল; বান্দরবানের বান্দরবান সদর ও আলীকদম; খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও রামগড়; সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা। এসব উপজেলার ৪২৪টি কেন্দ্র দুর্গম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে কক্ষ রয়েছে ১১ হাজার ৫৫৬টি।

৮ মে সাধারণ ছুটি:  প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট উপলক্ষে আগামী ৮ মে বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং দি ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশন্সের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অংশে ৩৭ নম্বর ক্রমিকের অনুবলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাহিদা মোতাবেক ১৪১টি উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের দিন অর্থাৎ ৮ মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো।

অস্ত্র প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা: নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৪ দিনের জন্য বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী সাত দিন হতে ভোটগ্রহণের পরবর্তী সাত দিন পর্যন্ত যাতে অস্ত্রের লাইসেন্সধারীরা অস্ত্রসহ চলাচল না করেন কিংবা অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন না করেন সে জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা জারি করেছে।

বাইক চলাচল নিষেধ তিন দিন: প্রথম ধাপের ভোটের দিন ও আগে পরে মিলিয়ে ১৫০টি উপজেলায় তিন দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংস্থাটির নির্দেশনায় প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এতে জানানো হয়, বুধবার (৮ মে) ভোটকে ঘিরে আগের দিন মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল নিষেধ থাকবে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ভোটের আগের মধ্যরাত ১২টা থেকে ভোট শেষে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা ট্যাক্সি ক্যাব, পিক আপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

থাকছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা: এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্য থাকবে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবে। এরআগে কখনো এত বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভোটকেন্দ্রে ছিলেন না। প্রতিটি স্বাভাবিক কেন্দ্রে অস্ত্রসহ তিনজন পুলিশ, অস্ত্রসহ আনসারের পিসি ও এপিসি থাকবেন তিনজন। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রধারী ছয় সদস্য থাকবেন। 

প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ আনসার সদস্য থাকবেন এবং ছয়টির বেশি বুথ আছে, এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য থাকবেন। আনসার থাকবেন তিনজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি ইউনিয়ন একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরদিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। 

গড়ে পাঁচটি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এই মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজন চেয়ারম্যান, ৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১০ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। চার উপজেলায় সব পদেই প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। 

ইসির অতিরিক্ত সচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা) ফরহাদ আহম্মদ খান জানান, বাগেরহাট সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মাদারীপুরের শিবচরে ও ফেনীর পরশুরামে চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাই এসব পদে ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হবে না। 

এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাংগি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; দিনাজপুরের হাকিমপুরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; গাইবান্ধার সাঘাটায় চেয়ারম্যান; পাবনার বেড়ায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; নাটোরের সিংড়ায় চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ভাইস চেয়ারম্যান; কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান; বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে চেয়ারম্যান, রাঙ্গামাটির কাউখালীতে ভাইস চেয়ারম্যান; চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন একক প্রার্থীরা।

শেয়ার করুন: