শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

অভিলাষ!!

শরাফ সরকার

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ৩ জুন ২০২৩

অভিলাষ!!

ফাইল ছবি

বিএনপির তারেক জিয়ার টেইক ব্যাক বাংলাদেশ। আজ হিলসাইড এভিনিউতে একটি পোস্টার দেখে দাঁড়িয়ে ভাবলাম। বাংলাদেশকে কেন আবার তারেক জিয়ার প্রয়োজন? বিএনপি-তারেক জিয়ার বাংলাদেশ নিয়ে এতো আগ্রহ কেন? বাংলাদেশের জন্মের সাথে বিএনপি বা তারেক কোন ভাবেই সংশ্লিষ্টতা ছিল না।

বিএনপি দলটি স্বাধীনতার অনেক পরে সামরিক শাসক জিয়ার ক্ষমতার আরোহন দেশের রাষ্ট্র পরিচালনার অভিলাসে জন্ম। বিভিন্ন দলছুট, উচ্চাভিলাসী, অতি বিপ্লবী স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ্য বিরোধীতাকারিদের নিয়ে গঠিত জাগদল থেকে জাতীয়তাবাদী দল। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি। পরবর্তীতে জিয়া উর্দি খুলে রাজনীতি করেছেন। প্রেসিডেন্ট বা রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছিলেন। জিয়ার মৃত্যুর পর তার সহধর্মিনী রাজনীতিতে আসেন এবং প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তারই সন্তান তারেক জিয়া, রাজনীতিতে বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা।

বেগম জিয়ার প্রশাসনের পাশাপাশি তার নিজের ক্ষমতার মহল হাওয়া ভবন। খালেদা জিয়ার মন্ত্রী পরিষদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা সরাসরি বিরোধীতাকারি নিজামী মুজাহিদ, তারেক জিয়ার আস্থাভাজন এক সময়ের মাদক চোরাচালানকারি বাবর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এমনিভাবে দ্বৈতভাবে নীতি নির্ধারক হিসেবে স্বাধীনতা বিরোধী চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের দ্বারা পরিচালিত হতে থাকে।

বিদ্যুৎখাত পুরোটাই লুটপাট, খাম্বা বা খুটি তারেক হিসেবে দেশের সম্পদ লুটের মহোৎসব শুরু হয়। বিমান বন্দর ড্রাগ চোরাচালানের জন্য স্বর্গ হয়ে যায়। সব কিছুর নিয়ন্ত্রক তারেক বাবর গিয়াস মামুন গংরা সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতেন। বেগম জিয়ার ভাই সামরিক অফিসার সাইদ ইস্কান্দার, প্রশাসন নিয়ন্ত্রন তারেক। সে সময় পুলিশ বিভাগে কোন কাজই বদলী ঘুষ বাণিজ্য ছিলো হাওয়া ভবনের নিয়ন্ত্রণে। সেই সময়ই হয়েছিলো ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাচালান। ২১ শে আগস্টের নির্মম মর্মান্তিক ঘটনা। সেই অবস্থানে দেশকে নেবার জন্য কি তারেক জিয়ার টেইক ব্যাক বাংলাদেশ!

মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভূইয়ার ইন্তেকাল

মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভূইয়া ছিনতাইকারিকে ধরিয়ে দেবার চেষ্টায় সেই ছিলতাইকারির আঘাতে মস্তিস্কে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গত দুসপ্তাহ আগে পরপারে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ছিনতাইয়ের ঘটনা হয়েছিল জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউতে। ১৬৯ স্ট্রীট সিটি টাকা তুলে দুপুরের দিকে সাইদ আহমেদ নামে এক ভদ্রলোক এসে পাশেই প্রিমিয়াম রেস্টুরেন্টে ঢোকার পর দেখলেন তাকে অনুস্বরণ করা একটি লোক সেখানেই ঘোরাঘুরি করছেন। সাইদ আহমেদের হাতে থাকা ব্যাগটি নিয়ে (যে ব্যাগে টাকা) টাকার পরিমাণ উনার ভাষ্যমতে খুব একটা বেশী নয়। লোকটি ব্যাগ ছিনিয়ে বাংগালী অধ্যুষিত হিলসাইড এভিনিউ নেমে দৌড়াতে থাকে তখন স্থানীয় ফাতেমা গ্রোসারির সামনে রুহুল আমিন ভূইয়া, নরসিংদীর আকতার, ফাতেমা গ্রোসারির মালিক দেলোয়ারসহ অনেকেই প্রত্যক্ষ্য করলো একটি দীর্ঘদেহী কাল লোক তাদের পাশ দিয়ে দৌড়াচ্ছে পিছনে সাইদ আহমেদ ধর! ধর! বলছেন তখন বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনসহ অনেকেই কাল লোকটির পিছনে তাকে ধরবার জন্য প্রচেষ্টা নেয়। ছিনতাইকারি দৌড়ে ১৬৭ স্ট্রীটে এসে পাশেই একটি বাংগালী মালিকানাধীন হেয়ার কাটিং সেলুনে ঢুকে পড়ে। ছিনতাইকারি ঘরে ঢোকার পর বাইরে সবাই অবস্থান নেয় পুলিশে খবর দেয়।

দিগি¦দিকশুন্য ছিনতাইকারি নিজেই দরজা টেনে বাইরে দাঁড়ানো কয়েক জনকে আঘাত করে এরই একজন মরহুম রুহুল আমিন ভূইয়া। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার পর মাঝে কিছুটা সুস্থ হয়েছিলেন। তারপর সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে চলে যান। কে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভূইয়া, জন্ম বাংলাদেশের ভোলা জেলায়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক পুলিশের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকা-ের পর, তৎকালীন সেনাপ্রধান সামরিক প্রশাসক জিয়া মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা সদস্যদের জেলে পুরেছিলেন সামরিক আইনে বিচার করে অনেককেই সংক্ষিপ্ত বিচার করে ফাঁসির আদেশে হত্যা করেছিলেন।

প্রতিদিনই কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অফিসারের ফাঁসি কার্যকর হতো। মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অপরাধে সেনাবাহিনীর সামরিক পুলিশ রুহুল আমিন ভূইয়া জেলখানায় আটক ছিলেন। রুহুল আমিন ভূইয়াকে যাবৎ জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেছিলো সামরিক আদালত জিয়ার নির্দেশে। জিয়ার পতনের পর মামলা করে রুহুল আমিন ভূইয়া মুক্ত হন অতঃপর যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভূইয়া প্রবাসে এসে অন্যের উপকার, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন। আসুন সবাই মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভূইয়ার জন্য দোয়া করি।

শেয়ার করুন: