বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

পর্যটকের সবচেয়ে বড় উৎস কানাডা 

যুক্তরাষ্ট্রে কমছে বিদেশি পর্যটক 

নবযুগ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৫:৪৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে কমছে বিদেশি পর্যটক 

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে কমছে বিদেশি পর্যটক। শুধু মার্চে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কম পর্যটক আসেন আমেরিকায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধের মাত্রা বৃদ্ধির মধ্যে আমেরিকা ভ্রমণ বাতিল করেছেন রেকর্ডসংখ্যক বিদেশি পর্যটক।
ইউএস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকার পর্যটন শিল্প দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বজায় রেখেছে। ২০২৪ সালে এ খাত থেকে প্রায় ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে এবং প্রায় ১৫ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, মধ্য আমেরিকা থেকে পর্যটকের সংখ্যা ২৪ শতাংশ এবং পশ্চিম ইউরোপ থেকে ১৭ শতাংশ কমেছে। জার্মানি ও স্পেন থেকে আগত পর্যটকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমেছে, যা যথাক্রমে ২৮ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ।
এ পরিসংখ্যানে কানাডা থেকে আসা পর্যটকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আমেরিকায় আসা বিদেশি পর্যটকের সবচেয়ে বড় উৎস কানাডা।
ইউএস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের ধারণা, প্রতি বছর প্রায় ২০ মিলিয়ন কানাডিয়ান শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে ফ্লোরিডা, অ্যারিজোনা ও ক্যালিফোর্নিয়ার মতো স্টেইটে ছুটি কাটাতে যান এবং ২০ বিলিয়নের বেশি ডলার খরচ করেন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, কানাডা থেকে অ্যামেরিকায় সড়কপথে ভ্রমণ ৩২ শতাংশ কমেছে। আর বিমানপথে আমেরিকা থেকে কানাডায় ফিরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ১৩.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এর অন্যতম কারণ আমেরিকান শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার ‘স্থানীয়ভাবে কিনুন’ প্রচার, যার উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনার মতো ঐতিহ্যবাহী শীতকালীন অবকাশযাপন কেন্দ্রগুলোর ওপর।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পর্যটক কমার এ প্রবণতার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের বহুমাত্রিক প্রভাব, নেতিবাচক রাজনৈতিক বক্তব্য, যা বিদেশে আমেরিকার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, যা পর্যটকবান্ধব নয় এমন পরিবেশ তৈরি করছে।
পর্যটক কমে যাওয়ার অর্থনৈতিক পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।
এ বিষয়ে ইউএস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন সতর্ক করে বলেছে, এ বছর এ খাত ৭২ বিলিয়ন ডলার আয় থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
অন্যদিকে গোল্ডম্যান স্যাকসের অনুমান, পর্যটক কমার সবচেয়ে বাজে ফল হতে পারে আমেরিকার জিডিপির ০.৩ শতাংশ হ্রাস, যার আর্থিক মূল্য ৯০ বিলিয়ন ডলারের মতো।
পর্যটনবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ট্যুরিজম ইকোনমিক্স তাদের ৩ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৫ সালে আমেরিকায় আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ৯.৪ শতাংশ কমার পূর্বাভাস দিয়েছে। যদিও বছরের শুরুতে তারা ৯ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম স্যাকস বলেন, পর্যটন কর্মকর্তারা নেতিবাচক ধারণাগুলো মোকাবিলার চেষ্টা করলেও ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণে অ্যামেরিকার পর্যটন খাত এখনও উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জে রয়েছে।
 

শেয়ার করুন: